১৩শ’ বছরের প্রাচীন মোহন্ত রাজার বাড়ি খনন শুরু
মহিউদ্দিন মোল্লা
কুমিল্লার ইটাল্লা গ্রামে অবস্থিত ১৩শ’ বছরের প্রাচীন মোহন্তরাজার বাড়ি খনন শুরু হয়েছে। ৬এপ্রিল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি খনন করছে। এটি খনন শেষ হলে এখানে অনেক প্রত্ন সম্পদ আবিষ্কৃত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাথে প্রত্ন পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। ইটাল্লার পাশের শরীফপুরের বৈষ্ণবরাজার বাড়ি ও বসন্তপুর গ্রামের বসন্ত রাজার বাড়িও খননের দাবি স্থানীয়দের।
রবিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা সদর উপজেলার ইটাল্লা গ্রামে মোহন্তরাজার বাড়ি সমতল থেকে উঁচুতে অবস্থিত। মোহন্তের স্তূপকে স্থানীয়রা বলেন,মনতের মুড়া। মুড়ার উত্তর পূর্ব কোনে দড়ি দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছে। সেখানে স্বল্প পরিসরে খনন চলছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তিনজন ও স্থানীয় সাতজন শ্রমিক খনন কাজ করছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শ্রমিক হাফিজার সরকার বলেন, ১২-১৩ বছর খননের সাথে জড়িত রয়েছি। বগুড়া মহাস্থানগড়েও দীর্ঘদিন কাজ করেছি। মোহন্তরাজার বাড়ি খনন করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
সূত্রমতে,কুমিল্লা শালবন বিহার থেকে প্রায় ১৫কি.মি. ও নগরী থেকে চার কি.মি. উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন। পাঁচটি বৌদ্ধ স্তূপ থাকার কারণে এই এলাকার পাঁচথুবী হয় বলে ইতিহাসবিদদের অভিমত। দীর্ঘদিন স্তূপ গুলো অবহেলায় বিনষ্ট হচ্ছে। স্তূপ গুলোর তিনটি শনাক্ত করা হয়েছে। স্তূপের ইট কেটে গরু ঘরের ফ্লোর বানাচ্ছে স্থানীয়রা। অনেকে স্তূপ কেটে বাড়ির কাজে লাগাচ্ছেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো: আতাউর রহমানসহ তার টিম পুরাকীর্তি গুলো পরিদর্শন করেন।
তৎকালীন আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো: আতাউর রহমান বলেন, শালবন বৌদ্ধ বিহার ও পাঁচথুবী এলাকা নিকটবর্তী। ধারণা করছি সব গুলো স্থাপনা একই সময়ের। এগুলো সংরক্ষণ হলে প্রত্ন পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান বলেন, আমরা পাঁচথুবী পরিদর্শনে গিয়ে তিনটি পুরাকীর্তি দেখেছি। সেগুলো অনেকে মাটি কেটে নিয়ে ধ্বংস করছে। আশা কথা হচ্ছে, দেরিতে হলেও মোহন্তরাজার বাড়ি খনন শুরু হয়েছে। পাশের বৈষ্ণবরাজার বাড়ি এবং বসন্ত রাজার বাড়িও খনন করা প্রয়োজন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক একেএম সাইফুর রহমান বলেন,আমরা মোহন্তরাজার বাড়ির খনন কাজ সম্প্রতি শুরু করেছি। খনন শেষে এবিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারবো।