বালিবাড়ির ২১০বছরের সেই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ
আল-আমিন কিবরিয়া ।।
বালিবাড়ি। কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার একটি গ্রাম। গোমতী নদীর তীরবর্তী এই গ্রাম ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিশেলে অনন্য এক পটভূমি। বালিবাড়ি গ্রামের ২১০ বছরের ঐতিহ্যের সাক্ষী একটি প্রাসাদ। কারুকার্য আর ফুলের নকশায় শিল্পকর্মময় প্রাসাদটি ছোট হলেও আকর্ষণীয়।
স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির ইমাম বকস্ আলী ভুঁইয়া তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন ১২২৬ বঙ্গাব্দে প্রথম দিকে। প্রাসাদটি প্রধান ফটকের উপরে খোদাই করে লেখা আছে এর নির্মাণ সাল।
ইমাম বকস্ আলী ভুঁইয়ার বংশধর কামরুল হাসান ভুঁইয়া বলেন, এই প্রাসাদ থেকে পরিচালিত হয়েছে দেবিদ্বার ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন ইমাম বকস্ আলী ভুঁইয়ার নাতি আকমত আলী ভুঁইয়া। তৎকালীন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ না থাকায়, ইউনিয়নের সকল কাজ পরিচালনা করতেন বকস্ আলী ভুঁইয়ার নির্মাণ করা ওই প্রাসাদ থেকে। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন এ প্রাসাদটিকে চিনতেন ‘প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ’ নামে।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদটির বাইর অংশে দেখা যায়, খসে পড়েছে প্রাসাদের অনেক অংশ। প্রধান ফটকে টিন দিয়ে বন্ধ করা। জরাজীর্ণ হওয়ায় এই ভবনে থাকে না কেউ। ভিতরে আছে ছোট-বড় ৫টি কক্ষ। উত্তরদিকে আছে ছাদে ওঠার সিঁড়ি। ছাদ থেকে যেদিকে তাকায় দেখা যায় গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ।
মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান শিহাব। বালিবাড়ি গ্রামে তার বাড়ি। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ বালিবাড়ি গ্রামের ঐতিহ্য। প্রাসাদটি সংস্কার করে আমাদের পরের প্রজন্মকে দেখার সুযোগ করে দেওয়া হোক।
জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রোকন উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, এই প্রাসাদের পাশাপাশি একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিলো। কিন্তু মসজিদ প্রশ^স্তকরণে ভাঙতে হয়েছে। মসজিদের পাশেই আছে আরো একটি বিশাল আকৃতির কাঁঠাল গাছ। যে গাছে প্রতি বছরই অধিক পরিমাণে কাঁঠাল আসে।
দেবিদ্বার পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, প্রাসাদটি সম্পর্কে আরো খোঁজ খবর নিবো। ভালো একটা পরিকল্পনা করে সংরক্ষণের জন্য চেষ্টা করব।