ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘুমন্ত শিশুকে হত্যা

 

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
মাত্র সাড়ে পাঁচ মাস বয়েসী শিশু মো. হুজাইফা। ভোর বেলায় মা রাবিয়া খাতুন ঘুমন্ত সন্তানকে বিছানায় রেখে যান ওযু করতে, ফিরে দেখেন বিছানাটি শূণ্য ! এদিক সেদিক খুঁজে শেষতক পেলেন পুকুরঘাটে, তাও নিথর দেহ! হাসপাতালে নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর ভাটপাড়া গ্রামে শিশু হুজাইফার রহস্যজনক এ মৃত্যুকে ঘিরে গোটা এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য-চলছে তোলপাড়। 
নিহত শিশু মো. হুজাইফা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের পুত্র। রোববার (৩০ আগস্ট) ভোরে বাড়ির অদূরবর্তী পুকুরের ঘাটলা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর পাঠানো হয়েছে মর্গে। পরিবারের অভিযোগ, পিতার সাবেক প্রেমিকা ব্যর্থ প্রেমের প্রতিশোধ নিতেই এমন জঘন্য কর্মটি করেছেন।
নিহতের পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো রোববার ভোরে জাকির হোসেনের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন ঘুমন্ত শিশুকে বিছানায় রেখে ঘরের দরজা খোলা রেখেই ফজরের নামাজের অযু করতে বাইরে যান। অযু সের ঘরে এসে দেখেন বিছানাটি শূণ্য, নেই ঘুমন্ত শিশু। এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির অদূরের পুকুরের ঘাটলায় শিশুটির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেনন। পরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চার-পাঁচ বছর আগে পার্শ্ববর্তী রাজঘর গ্রামের নূর মিয়ার মেয়ে সামিনা বেগমের সঙ্গে শিশুটির বাবা জাকির হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু জাকিরের অন্যত্র বিয়ে হলে সামিয়া ফুঁসে ওঠেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা হলেও সামিয়া ‘জাকির কীভাবে সুখের সংসার করবে’ তা দেখে নেয়ার হুমকি দেয় সামিয়া। পরবর্তীতে জাকিরের প্রতিবেশী চাচাতো ভাই হাফিজের সঙ্গে বিয়ে হয় সামিয়ার। বিয়ের পর থেকেই সামিয়া বিভিন্ন সময় জাকির ও তার পরিবারের সঙ্গে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে দ্বন্ধ-সংঘাত চালিয়ে আসছিলো। এই বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকেও একাধিকবার অবহিত করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, এরই জের ধরে ব্যর্থ প্রেমের প্রতিশোধ নিতেই প্রতিবেশী সামিনা বেগম ও তার স্বামী হাফিজকে সাথে নিতে ওই শিশুটিকে হত্যা করে ফেলে আসে।গ্রামবাসী জানান, বিষয়টি রহস্যজনক। তারা মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) ইশতিয়াক আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’