বরুড়ার ওড্ডা গ্রামে মোগল আমলের নান্দনিক মসজিদ

 

inside post

আবু সুফিয়ান রাসেল।।

ওড্ডা ফাতেহ খাঁ জামে মসজিদ। নানা শিল্প ও কারুকাজে ঘেরা তিন গুম্বুজ নান্দনিক একটি স্থাপনা। প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, এটি মোগল আমলের নিদর্শন। ১৭৮০ সালে নির্মিত মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি স্থানীয়দের।

১৭৮০ সালে নির্মিত ওড্ডা ফাতেহ খাঁ জামে মসজিদ।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ওড্ডা গ্রামের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ ফাতেহ খাঁ জামে মসজিদ। একাধিক ইতিহাস গ্রন্থে ও স্থানীয়দের নিকট ফাতেহ খাঁ মসজিদ নামে পরিচিত। মূল মসজিদের দৈর্ঘ্য ৩৬ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ফুট। চারদিকের প্রতিটি দেয়ালের ঘনত্ব তিন ফুট, প্রতিটি দেয়ালে রয়েছে বিশেষ আকৃতির খোপ। মসজিদের ভেতরের অংশে রয়েছে মোগল আমলের দৃষ্টি নন্দন কারুকাজ। তিনটি গুম্বুজে ভেতরে ও বাইরে শৈল্পিক নির্দশন। তিনটি গুম্বুজের চারপাশে রয়েছে আটটি মিনার। মাঝের গুম্বুজে রয়েছে চাঁদ-তারা। প্রতিটি দেয়ালে রয়েছে ফুল পাতার সচিত্র কারুকাজ।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আবু তাহের মনে করেন, ফাতেহ খাঁ নামের কোন ব্যক্তির নামে এ মসজিদটি তৈরি হয়েছে। এটি বরুড়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। সরকারের নিকট দাবি মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করা হোক। এ মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে তিনটি শতবছরের পুরানো পাকা কবর। এ কবরগুলো কার তা জানা যায়নি। এ মসজিদের পশ্চিম অংশ দিয়ে বিশাল নদী পথ ছিলো। যে নৌ পথে বাণিজ্যিক নৌকা চলাচল করতো। যা এখন বিলুপ্ত। ফাতেহ খাঁ মসজিদ, কবরস্থান ও দিঘি নিয়ে লোকমুখে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে।

 

মসজিদের খতিব মাওলানা দেলোয়ার হোসইন আল-ক্বাদরী বলেন, আমি দীর্ঘ ২৫ বছর এ মসজিদের খেদমতে আছি। মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও নামকরণের বিষয়ে আমাদের জানা নেই। মসজিদটি ভেতরের দেয়ালে কালো ফলকে আরবি ক্যালিওগ্রাফি রয়েছে। বিগত সময়ে কয়েক দফা এ মসজিদ সংষ্কার করা হয়েছে। চারদিকে বর্ধন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের আন্তরিকতায় মূল কারুকাজ এখনও অবিকৃত রয়েছে। এ মসজিদের অন্যতম দিক হলো মুসল্লিরা যে নিয়তে দোয়া করেন, সে দোয়া আল্লাহ কবুল করেন।

মসজিদের গায়ে গ্রথিত কালোপাথরের শিলালিপি

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, এ মসজিদটি আমি পরিদর্শন করেছি। ফাতেখা মসজিদটি মুসলিম শিল্পকলার অনন্য উদাহরণ। ফাতেখা নামের একজন ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেন। প্রাচীন গেট ও বিশাল দিঘি সমৃদ্ধ মসজিদটি ১৭৮০ সালে নির্মাণ করা হয়। মসজিদের গায়ে গ্রথিত কালোপাথরের শিলালিপি রয়েছে। তিন গম্বুজ দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি মোগল আমলের মসজিদ। এর বয়স তিনশ’ বছরের বেশি হবে। মসজিদটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।

আরো পড়ুন