কভিড টেস্টের লাইনে দাঁড়ানোবস্থায় ইমামের মৃত্যু

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
কভিড টেস্টের স্যাম্পল আর দেয়া হয়নি! নির্ধারিত ফরম পূরণ করে যথানিয়মেই নমুনা দিতে লাইনে দাঁড়ান ইকবাল হোসেন।দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে আচমকা অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। দ্রুত জরুরি বিভাগে নেয়া হলেও হয়নি তাঁর শেষ রক্ষা, মারা যান মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. ইকবাল হোসেন। চিকিৎসক জানায়, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। ঘটনার পর হাসপাতালের করোনার রোগীসহ সাধারণ রোগীদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করতে হয় পুলিশ। এহেন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের।
বুধবার (২৮ জুলাই) সকালে আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের এন্টিজেন সেন্টারের সামনে (বিএমএ ভবন) মারা যাওয়া হাফেজ মো. ইকবাল হোসেন (৪৩) সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বেহাইর গ্রামের আম্বর বাড়ির সহিদুল ইসলামের পুত্র। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যার জনক এবং জেলার আখাউড়া উপজেলা সদরের খড়মপুর গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
কভিড টেস্টের লাইনে দাঁড়ানোবস্থায় মারা যাওয়া হাফেজ ইকবাল হোসেনের পারিবারিক সূত্র এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ঠাণ্ডা, জ্বরসহ করোনা উপসর্গে  ভুগছিলেন তিনি। বুধবার সকালে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য স্বজনরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সকাল পৌণে নয়টায় পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ শেষে যথানিয়মেই নমুনা দেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ান ইকবাল হোসেন। হাসপাতাল কম্পাউণ্ডে তখন করোনা পরীক্ষার জন্য আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন বিদ্যমান ছিলো। দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আচমকাই অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইকবাল হোসেন। সাথে সাথেই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় হাসপাতালের করোনা রোগী, অন্যান্য রোগী এমনকি সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থালে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হাসপাতাল অঙ্গনে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম জানান, পুলিশ এসে হাসপাতাল এলাকার পরিস্থিতিস্বাভাবিক করেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হাসাপাতালে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোলায়মান মিয়া বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘ইকবাল হোসেন নামের ওই ব্যক্তি করোনা ভাইরাস সাসপেক্টেট ছিলেন। তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনার পর মৃত্যু হয়।’