কসবায় মাদকাসক্ত-চোর-সন্ত্রাসীদের দাপটে নির্ঘুম রাত কাটছে ছয় গ্রামবাসীর
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
মাদকাসক্ত একটি চক্র। নেশার টাকা যোগাতে বহুমাত্রিক অপরাধ করে বেড়াচ্ছে মাদক সেবন-বিক্রিতে সম্পৃক্ত চক্রটি। অপরাধের অভয়ারণ্যে তাদের দাপটে চরম নিরাপত্তাহীন আর আতঙ্কিত ছয়টি গ্রামের মানুষ। গ্রাম-ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিবাদ সভা, দু’জনকে পুলিশে সোপর্দ করাসহ রজু হয়েছে একাধিক জিডি-মামলা। শেষতক পুলিশ সুপার বরাবর দাখিল হয়েছে লিখিত অভিযোগ। এহেন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকার।
জেলার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে নোয়াপাড়া, চন্দ্রপুর, ভরাজাঙ্গাল, খারঘর, গাববাড়ি, ধামসার নামীয় ছয়টি গ্রাম। স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র মদ-গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন রকম মাদক সেবন-বিক্রির মাধ্যমে এলাকাটিকে পরিণত করেছে ক্রাইম জোনে। চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বহুমাত্রিক অপরাধ করেই যাচ্ছে মাদকাসক্ত এই চক্রটি। গত দেড় বছর ধরে তাদের দাপটে নির্ঘুম রাত কাটছে উল্লেখিত ছয়টি গ্রামের মানুষদের। ওই চক্রের অপকর্মের শিকার হয়ে বহু পরিবার নি:স্ব হয়ে গেছেন বলেও ভুক্তভোগীরা জানান।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অতি সম্প্রতি গাববাড়ি গ্রামের মনিরের সিএনজি, বিনাউটি গ্রামের জয়নালের মোটরসাইকেল চুরি হয়। পাশাপাশি সময়ে চন্দ্রপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সঞ্জিত চন্দ্র দাসের ঘরের তালা ভেঙ্গে ওষুধ, সার, কীটনাশক চুরির ঘটনায় সালিশী সভায় উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হওয়ায় চিহ্নিতদেরকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা সালিশের রায় তামিল না করে উল্টো অভিযোগকারীদের প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তাছাড়া নোয়াপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আওয়াল মিয়া, মুজিবুর রহমান, চন্দ্রপুরের দুলাল মিয়া, খারঘরের মফিজ মিয়াসহ অনেকেরই গরু চুরি হয়েছে। আরো অনেকের পানি সেচের মোটর, ফ্যান, স্বর্ণালঙ্কার, গৃহস্থালির ব্যবহার্য সামগ্রীও চুরি হয়েছে। গত দেড় বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল চুরি হয়েছে সাধারণ মানুষের। তাদের এহেন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ২২ জুলাই নোয়াপাড়া গ্রামের ফোরকানিয়া মাদ্রাসা মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে গ্রামের সচেতন মহল এবং ক্ষতিগ্রস্থরা। সেদিনই গ্রামের মৃত হোসেন মিয়ার পুত্র মো. শিবলু মিয়া ও মো. আমজাদ হোসেনের পুত্র মো. আরাফাত মিয়াকে হাতেনাতে ধরে কসবা থানা পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। বর্তমানে তারা জেলা কারাগারে অন্তরীণ। তাদের এবং তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে কসবা থানায় দু’টি সাধারণ ডায়রি (জিডি) এবং তিনটি চুরির মামলা বিদ্যমান।