কুমিল্লায় রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

 

তাপস চন্দ্র সরকার।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের আপনজনের মঙ্গল কামনায় শনিবার (৪ নভেম্বর ২০২৩) প্রথমদিনে কুমিল্লা মহানগরীর রাম ঘটলা রোডস্থ মহেশাঙ্গণ নাট মন্দিরে লোকনাথের আরাধনায় নিমগ্ন থেকে এই ব্রত পালন করেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত প্রায় ৭ শতাধিক লোকনাথ অনুসারী ভক্ত ও পূর্ণ্যাথী। এসময় প্রদীপ, ধুপ, ফল, ফুল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে মগ্ন থাকেন আরাধনায়।
জানা যায়- প্রাণঘাতী রোগ কলেরা-বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাস পালন এবং আশ্রম প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে বিপদ-আপদ, রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে ও আপনজনের কল্যাণ কামনা করে লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা পালন করে থাকেন ‘রাখের উপবাস’। কার্তিক ব্রত কোন কোন স্থানে ‘গোসাইর উপবাস’ নামেও পরিচিত এই ব্রত। প্রতি বছরের ১৫ কার্তিকের পর মাসের বাকি সময়ের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার লোকনাথ অনুসারীরা এই ব্রত পালন করেন। প্রতিবছর ঘটা করে এ উৎসব পালিত হয়। বিকেল ৩টা হতেই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা মহেশাঙ্গণে এসে জড়ো হন।
কুমিল্লা মহেশাঙ্গণ লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিক ও লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ব্রতের আগের দিন সংযম করতে হয়। তারপর উপবাস থেকে সন্ধ্যায় আগে ধূপ-প্রদীপ ইত্যাদি নিয়ে বসতে হয়। আরাধনায় বসে প্রদীপ জ্বালানোর পর কথা বলা বন্ধ করে দিতে হয়। সংযম, মনোব্রতের মাধ্যমে একাগ্রচিত্তে লোকনাথকে ডাকতে হয়। প্রদীপ আলো নিভে গেলে মন্দির থেকে ফলফলাদি ও চড়ুই প্রসাদ দেওয়া হয় পূণ্যার্থীদের। তারা বলেন- আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি লোকনাথ যুব সেবা সংঘের প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
মহেশাঙ্গণে আসা একজন ব্রতী/পূর্ণ্যাথী রিতা রাণী মজুমদার বলেন, আমি আজকে উপবাস থেকে আমার পরিবারের সকলের মঙ্গল কামণাসহ আপনজনের মঙ্গল কামনায় এখানে এসেছি প্রদীপ প্রোজ্জ্বলন করতে। এতে বাবার লোকনাথের পাঁচালী পাঠ করেন অধ্যাপক শ্যামা প্রসাদ ভট্টাচার্য।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সভাপতি ননী গোপাল পাল, সহ-সভাপতি প্রলয় সিংহ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় চৌধুরী পার্থ প্রমুখ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘ ও লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সদস্যবৃন্দসহ হাজার হাজার দর্শণ্যার্থী।