কুমিল্লায় অর্থাভাবে সন্তান ফেলে গেলেন বাবা-মা

 

মাহফুজ নান্টু:  শিরিন-মিজান দম্পতির একসাথে দুটি কন্যা শিশু জন্ম নেয়। গত ৫ জুলাই দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপরিপক্ক অবস্থায় জন্ম নেয় বাচ্চা দুটি। পরে একটি বাচ্চা মারা যায় । উপায় না দেখে দু’দিন পর গত ৭ জুলাই অপর বাচ্চাটিকে বাঁচানোর জন্য নগরীর ঝাউতলা মা ও শিশু স্পেশালাইজ হসপিটালে এনে ভর্তি করেন বাবা মিজানুর রহমান। ভর্তির আধঘন্টা পরে হসপিটালের চিকিৎসার খরচের পরিমাণ জেনে চলে বাবা যান। তার কিছুক্ষণ পরে মাও চলে যান। পরে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বাবা মাকে খোঁজাখুজি করেন। এ ঘটনার চারদিন পরে হাসপাতালে আসেন শিশুটির মা শিরিন আক্তার। অর্থাভাবে সন্তানকে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। এমন সংবাদে এগিয়ে আসেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ সৈয়দ নুরুল ইসলাম। রবিবার তিনি নগরীর ঝাউতলা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হসপিটালে এসে শিশুটির চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করবেন বলে হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে জানান।

শিশুটির বাবা মিজানুর রহমান জানান, তাদের বাড়ি ছিলো কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওড়ায়। তবে এখন থাকেন চান্দিনায়। সেখানে একটি খাবার হোটেল আছে। করোনায় বেচাবিক্রি না থাকায় চরম অর্থাভাবে পড়েন। তাই সন্তানকে হসপিটালে রেখে চলে যান টাকা পয়সার ব্যবস্থা করতে।
শিশুটির মা শিরিন আক্তার বলেন, গত ৫ তারিখ সিজারে দু’টি কন্যা শিশু জন্ম হয়। একটি মারা যায়। তিনি অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে জানতে পারেন তার একটি কন্যা মারা যায় আরেকটি ঝাউতলায় চিকিৎসাধীন। এর মাঝে চারদিন অতিবাহিত হয়। পরে শিরিন আক্তার সন্তানকে দেখতে ঝাউতলা হসপিটালে চলে আসেন।
এদিকে শিশুটির চিকিৎসক জহিরুল আলম জানান, গত ৭ তারিখ ভর্তি করানোর পরে হাসপাতালে শিশুটির বাবা- মাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটির ওজন মাত্র সাড়ে সাতশ গ্রাম। বাবা- মাকে খুঁজে না পেলেও অপরিপক্ক শিশুটিকে আমরা চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখি। তবে শিশুটির ফুসফুসসহ অন্যান্য অর্গান অপরিপক্ক থাকায় মানে ২৮ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করায় আমরা একটু সংশয়ে আছি। দেখা যাক কি হয়।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, টাকার অভাবে হসপিটালে নবজাতককে ফেলে চলে যায় বাবা- মা। বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিশুর বাবা- মাকে খবর দেই। তারা হসপিটালে আসেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার প্রতিশ্রæতি দেই।