কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশের লিফলেট বিতরণ:  বাঞ্ছারামপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া মারা গেছেন। শনিবার রাত ৮ টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মারা যাওয়ার তথ্য নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের মোল্লাবাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছিলো নয়নসহ আরো দুইজন। নিহত নয়ন মিয়া (২২) বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে এবং সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি। এদিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপকালে পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমানকে (২৫) নামে বিএনপির দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে  জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা সদর এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করে। প্রচারপত্র বিতরণ শেষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ) সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে মোল্লাবাড়ি থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলটি উপজেলা সদরের বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা অতিক্রম শেষে পুনরায় মোল্লা বাড়ির মসজিদের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ জড়ো হয়ে সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে যায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি থেকে এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া শুরু হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। নয়ন নামে এক ছাত্রদল নেতা পেটে গুলিবিদব্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় পৌর যুবদলের আহবায়ক ইমান আলীসহ আরো দুইজন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ নয়নকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। রাত ৮টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ময়মনসিংহ) সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামাল বলেন, ‘কোনো রকম উস্কানি ছাড়াই পুলিশ অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়।’ জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ফুজায়েল চৌধুরী বলেন, ‘লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত করেছে।’
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি নূরে আলম বলেন, ‘বিকেলে বিএনপির একশ থেকে দেড়শ’ নেতাকর্মী আকস্মিক মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হয়। তারা পুলিশ ও সরকার বিরোধী বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দেয়াসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। সেখানে থাকা টহল দলের দুই কনস্টেবলের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে কনস্টেবল এক রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি। এসময় আত্নরক্ষা আমরা দুই রাউণ্ড ফাকা গুলি করি।’