কুমিল্লায় হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ, রোগীর মৃত্যু

আবদুল্লাহ আল মারুফ।।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে অপারেশন চলাকালীন অক্সিজেন সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ। আহত হয়েছে অপারেশন থিয়েটারের সামনে থাকা ওই রোগীর ছেলেসহ আরও দুইজন। নিহত রোগীর নাম শিরিন বেগম (৫২)। তিনি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শীলমুড়ি ইউনিয়নের ফলকামুড়া গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
রোগীর ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মাকে শনিবার ডায়াবেটিস হাসপাতালে নিয়ে যাই। পায়ের ইনফেকশন থাকায় ডাক্তার বলেছে মাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে। মাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করাই। বুধবার ডাক্তার বলেন, মায়ের পা কেটে ফেলতে হবে। রাতে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর আমাকে ওখানকার ডাক্তারের সহযোগীরা বললো বাইরের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে আনতে। ৭০০ টাকা দিয়ে কিনে আনলাম। সিলিন্ডারটা থেকে অক্সিজেন সাপ্লাই হচ্ছিল না তাই অ্যাম্বুল্যান্সের ড্রাইভার ও তার সহযোগী মিলে এটা ঠিক করার একপর্যায়ে বিষ্ফোরণ হয়। তখন পুরো অপারেশন থিয়েটার অন্ধকার হয়ে যায়। এতে আমার দুই হাত ও মুখ ঝলসে যায়। অ্যাম্বুল্যান্সের চালকসহ দুইজন গুরুতর আহত হয়। এসময় ডাক্তাররা আমার মায়ের পা সেলাই না করে ব্যান্ডেজ করেই চলে যান। রক্তক্ষরণ হতে হতে আমার মা মারা গেছেন। তিনি দাবি করেন, সরকারি সিলিন্ডার থাকার পরেও তারা আমাকে বাইরে থেকে সিলিন্ডার আনতে বললো। বাইরের সিলিন্ডারের বিষ্ফোরণে ডাক্তাররা ভয় পেয়ে তাড়াহুড়ো করে ব্যান্ডেজ না করেই চলে গেছে। মায়ের পা সেলাই করলে তিনি বেঁচে থাকতেন।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডারটি রোগীর লোকেরা বাইরে থেকে এনেছে। তারা সিলিন্ডারের মুখ খোলার সময় অক্সিজেন জোরে বের হওয়াতে তারা আহত হয়েছে। তবে হাসপাতালের ডাক্তার বা নার্স কেউ আহত হননি। ঘটনাটা ঘটেছে অপারেশন থিয়েটারের সামনে। ঘটনায় আহত ড্রাইভারকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে। তাহলে হাসপাতালের কর্মরতরা বাইরে কেন অক্সিজেনের জন্য পাঠাবে। ওরা নিজেরাই নিয়ে এসেছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। তাছাড়া ওই রোগীর মৃত্যুর সাথে বিষ্ফোরণের কোন সংযোগ নেই। ওই রোগী শকে ছিল। তাই তাকে দ্রুুত আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। ওখানে তিনি মারা গেছেন। অপারেশন থিয়েটারে কোন কিছুই হয়নি।