কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কে কাটা পড়ছে ৫হাজার গাছ
আল-আমিন কিবরিয়া ।
দুই পাশে সারি সারি গাছ। মাঝে দিয়ে বয়ে গেছে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক। একসময় গাছগাছালিতে নয়নাভিরাম ছিলো এই সড়কের চিত্র। বছরের শুরু থেকে সড়ক প্রশস্ত করতে কেটে ফেলা হচ্ছে প্রায় ৫হাজার গাছ।
অর্ধশত বছরের পুরাতন এই গাছগুলো ছিলো ১৮ ফুটের বর্তমান সড়কটির দুই পাশে। গাছ কাটায় বিপন্ন হচ্ছে জেলার বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণপাড়াসহ সড়ক এলাকার জনজীবন। কুমিল্লা অংশে গাছ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৮২৪ টি। এর মধ্যে যে এলাকা দিয়ে সড়ক যাবে না সে এলাকার গাছগুলো কাটা হয়েছে আগেভাগে। বাকিগুলো কাটাকাটি চলছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ভারত বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে হবে এ সড়ক। কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার দুই লেন থেকে উন্নত হবে চার লেনে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। তার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
কথা হয়েছে দেবিদ্বার ভিরাল্লা স্টেশনের দোকানি আবু মুসার সাথে। গাছ কাটায় ভাটা পড়েছে তার ব্যবসায়। এক প্রকার ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, সড়কে যারা গাছ কাটে আমরা তাদেরকে এই স্টেশনের গাছগুলো পরে কাটতে বলেছিলাম। তারা আমাদের কথা শুনেনি। এই স্টেশনে বিশাল আকৃতির ৭-৮ গাছ ছিল। কেটে ফেলায় সবগুলো দোকানের উপর প্রখর রোদের প্রভাব পড়ে। এই কারণে দিনে বেলা দোকানে ক্রেতার সমাগম কম।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর এলাকার বাসিন্দ রমিজ মিয়া জানান, সড়কের দুই পাশের প্রায় গাছই বিশাল আকৃতির। তীব্র গরমের মধ্যেও সড়কটি থাকতো শীতল। গাছগুলো কাটায় গ্রীষ্মের তীব্র রোদের যাত্রী-পথচারী, দোকানি ও সড়ক পাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের নাজেহাল অবস্থা। গাছগুলো রেখে কি সড়ক বর্ধিত করা যেতো না।
পরিবেশ আন্দোলন কুমিল্লা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম জানান, প্রতি বছর বিভিন্ন অজুহাতে কুমিল্লায় হাজার হাজার গাছ কাটা হচ্ছে। এতে দিন দিন পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। তার উদাহরণ দেশের বর্তমান তীব্র তাপ প্রবাহ। পরিবেশেরে ভারসাম্য রক্ষায় অবাধে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। আগামী ৫ বছর বেশি করে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।
এবিষয়ে জানতে কুমিল্লার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তার কার্যালয়ে একাধিকবার গিয়ে না পেয়ে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।