কুমিল্লা সনাকের আয়োজনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে মুক্ত আলোচনা সভা

 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার উদ্যোগে ২১ জুলাই ২০২০ বিকাল ৩:৩০ টায় কুমিল্লা ক্লাস্টারের অর্ন্তভূক্ত ৫টি সনাক (কুমিল্লা, চাঁদপুর, গাজীপুর, লক্ষীপুর  ও মুন্সিগঞ্জ) এর ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সার্পোট (ইয়েস) ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্য তথা তরুণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে “অনলাইন প্লাটফর্মে দুর্নীতিবেরোধী প্রচারণা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮” শীর্ষক মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুম অনলাইন মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮” বিষয়ে মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। তিনি তার দীর্ঘ আলোচনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর সকল ধারা ও উপধারাগুলো বিশ্লেষন করেন এবং সেই সকল ধারা উপধারাগুলো লংঘন করলে তার অপরাধের মাত্রা, কোনটি জামিনযোগ্য, কোনটি জামিনযোগ্য নয় এবং কি ধরনের শাস্তি/জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে তা তুলে ধরেন। একই সাথে তিনি এই আইনের দূর্বল দিক ও ধারাসমূহের মধ্যে পারস্পারিক সাংঘর্ষিক দিকগুলো চমৎকারভাবে তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

মুক্ত আলোচনায় উত্থাপিত বিষয়সহ সার্বিক বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে টিআইবি’র সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস বলেন, আজকের আলোচনাটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে একই সাথে আমাদের যে সকল ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্য বিভিন্ন সনাক থেকে অংশগ্রহণ করেছে তাদের সুনির্দিষ্ট প্রশ্নই প্রমান করে তারাও গুরুত্ব অনুধাবন করে অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে আলোচকের আলোচনা গ্রহণ করেছেন। আজকের আলোচনা যাতে আমাদের দুনীতিবিরোধী আন্দোলন এই আইনের ধারাগুলো বিবেচনায় নিয়েই করতে পারি, সেটাই প্রতাশা, আরে সেজন্যই আমাদের এই আয়োজন।

“ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অনলাইন প্লাটফর্মে দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণা”বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে টিআইবি’র সিনিয়র প্রোগাম ম্যানেজার মো: আতিকুর রহমান বলেন, এ আইনটি স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রধান আন্তরায়। তিনি বলেন এই আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের জন্য যখন সমাজের বিভিন্ন কর্নার থেকে দাবী উত্থাপন হয় তখন এই ধারা বাতিলের নামে এটিতে আরো বেশী নিপীড়নমূলক ধারা সংযোজন করা হয়েছে। আইন রাষ্ট্রের ও জনগণের সুবিধার জন্য করা হলেও এই আইনটিতে নিপীড়নমূলক ধারা সংযোজন করে এটিকে এশটি ভাল আইন বলা যায় না। এটি যখন যারা ক্ষমতায় থাকবেন তারা ইচ্ছা করলেই বিরোধী মত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। মূলত এটি নাগরিকদের কন্ঠরোধ করার জন্য করা হয়েছে এটি স্পষ্ট। সুতরাং এই আইনটির সকল ধারা সচেতনভাবে বিবেচনায় নিয়েই আমরা আমাদের তরুণ বন্ধুদের সাথে নিয়েই দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাব।

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আলোচ্য বিষয়ের উপর উল্লেখিত ৫টি সনাক থেকে ১৭ জন ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্য বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেন এবং যথারীতি ব্যারিষ্টার খান সেই উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করেন।

“ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপটে “ডিজিটাল মিডিয়ায় দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণার ক্ষেত্রে ঝুঁকিসমূহ ও করণীয়” বিষয়ে আলোচনায় সনাক চাঁদপুরের সদস্য এ্যাডভোকেট পলাশ মজুমদার বলেন, যেকোন আইনের ভাল ও খারাপ দিক আছে এবং সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই আমাদের চলতে হবে। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব এবং আইনের মধ্যে থেকেই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক কুমিল্লার ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস উপকমিটির আহবায়ক রোকেয়া বেগম শেফালী। সভাপ্রধান হিসেবে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সনাক কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু। আলোচনায় আরো যুক্ত ছিলেন টিআইবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোসাম্মাৎ ফজিলা খানম ও কাজী শফিকুর রহমান, প্রশিক্ষণ বিভাগের ম্যানেজার নাদিরা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোসাদ্দেক হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজার (ডকুমেন্টেশন) ইয়াসমিন আরা বেবী, ফরিদপুর, সিলেট ও কুমিল্লা ক্লাস্টারের প্রোগ্রাম ম্যানেজার যথাক্রমে মোহাম্মদ আবদুর রহমান, নাজমা খানম নাজু ও মো: হুমায়ুন কবীর। সনাক কুমিল্লা, চাঁদপুর, গাজীপুর, ল²ীপুর ও মুন্সিগঞ্জের এরিয়া ম্যানেজার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারগণ। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন কুমিল্লার এরিয়া ম্যানেজার প্রবীর কুমার দত্ত।

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।।