কুমেক হাসপাতালে মৃতকে রোগী সাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চক্রের প্রতারণা !

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল।।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে মৃতকে রোগী সাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চক্রের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে হাসপাতাল থেকে ভর্তি রোগী নিয়ে গেলেও খবর নেই কর্তৃপক্ষের। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার উত্তর বাঙ্গরা গ্রামের শাহিন মিয়ার ছেলে মাহবুবুল আলম বাবুল।
সূত্রমতে,সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বাস যাত্রী হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে চিকিৎসাধীন থাকলেও রোগীর খোঁজ মিলেছে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে। তবে জীবিত নয়, হাসপাতালে এসে স্বজনরা এই রোগীকে পেয়েছেন মৃত।
সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে যোগে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে বলে মোবাইল ফোনে রোগীর স্বজনদের জানায় হাসপাতালের সামনে থাকা প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স চালক রোহান। এজন্য অ্যাম্বুলেন্স চালক তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। দ্রুত এ টাকা পাঠাতে বলেন। কিন্তু অনেক নাটকীয়তার পর ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক আবার কল করে ১৫ হাজারে নেমে আসেন। সবশেষে ১১ হাজার টাকা দাবি করেন। এদিকে এই খবর পেয়ে বাবুলের স্বজনরা কুমেক হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে এসে দেখেন তাদের রোগী আহত বাবুল সিটে নেই। তারা বাবুলকে মৃত পান অ্যাম্বুলেন্সে।
এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সামনে মালিক ও চালকের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সের মালিক ও চালককে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। রোগীর স্বজনরা অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালককে আটক করলেও পরে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়। ঢাকা মেট্রো-৭১৩০৭২ নম্বরের অ্যাম্বুলেন্সটির মালিক ইউছুফের বাড়ি কুমিল্লা নগরীতে এবং চালক রোহান কোতয়ালী থানাধীন মুরাদপুর এলাকার মোঃ রফিকের ছেলে।
রোগীর স্বজন সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকার কথা; কিন্তু কোন ছাড়পত্র কিংবা রেফার করা ছাড়া রোগী অ্যাম্বুলেন্সে যায় কিভাবে? এ ঘটনার জন্যে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন।
এবিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ভোর বেলায় হাসপাতালে লোকজন কম থাকার সুযোগে জরুরি বিভাগের কাছ থেকে চক্রটি আহত রোগীটিকে নিয়ে যায়। যারা এই কাজটি করেছে, গুরুতর অন্যায় করেছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আজিম-উল-আহসান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে এই সিন্ডিকেটে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্যÑ বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবিদ্বারে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তিশা পরিবহনের একটি বাসে ১৫ যাত্রী আহত হয়। ওই ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১২জনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। ভর্তি হওয়া গুরুতর আহত বাস যাত্রীদের একজন মাহবুবুল আলম বাবুল।