গোমতীর চরের ফেলনা মুলা এখন সাদা সোনা!

 

অফিস রিপোর্টার।।
সময় মতো মুলা চাষ না করে অনেক কৃষক লাভবান হন না। কারো নিকট তাই মুলা ফেলনা সবজি। তবে মুলা আগাম চাষে গোমতীর চরের কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। কেউ কেউ টানা ৩-৪বার মুলা চাষ করেছেন। লাভ পচ্ছেন ৩গুণ। তাই এই মুলা এখন কৃষকের নিকট সাদা সোনায় পরিণত হয়েছে।
কৃষি অফিসের সূত্রমতে, কুমিল্লার সদর, বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর,দাউদকান্দি উপজেলার গোমতী নদীর চরের কৃষকদের জমিতে এখন মুলার হাসি দেখা যাচ্ছে। আষাঢ় মাস থেকেই মুলা বপন শুরু করেন বুড়িচং উপজেলার ভান্তী এলাকার মুলা চাষিরা। ইতিমধ্যে কেউ তিনবার, কেউবা চারবার মুলা আবাদ করেছেন। ৩৫ থেকে ৪০ দিনে কৃষকেরা উৎপাদন করছেন এই মুলা। ৪০ শতাংশের প্রতি কানি জমিতে আয় করেছেন প্রতিবারে ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। কানি প্রতি বিক্রি হয় ৬০ থেকে ১ লক্ষ টাকা। যেখানে খরচ হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে মুলা বিক্রি হয়ে চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম,ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার আড়তে। মুলা উৎপাদনের পর কৃষকেরা চরে জমি গুলোতে চাষ করেন আগাম আলু। আলু বপনের ১০-১৫ দিন পর সাথী ফসল হিসাবে বপন করা হয় মিষ্টি কুমড়ার বীজ।
স্থানীয় ভান্তী গ্রামের কৃষক আবু তাহের মেম্বার ও ফারুক আহমেদ বলেন, বর্যাকালে পাহাড়ি ঢলে গোমতী প্লাবিত হলে বন্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়া মুলার গায়ে ক্ষত সৃষ্টিকারী পোকার আক্রমণ হয়। এই দুই বিষয়ে মাঝে মাঝেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মুলা চাষিরা পোকার উপদ্রব থেকে স্বস্তি চান।
বালিখাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৬কানি জমিতে মুলা চাষ করেছি। চরের এই মুলার স্বাদ ভালো। তাই জেলার বাইরেও এর চাহিদা রয়েছে।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, ষোলনল ব্লকের বালিখাড়া,পূর্বহুড়া ও কামারখাড়ায় মুলার চাষ বেশি হয়। পোকার উপদ্রব থেকে স্বস্তি দিতে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, মুলা চাষিদের বালাইনাশকের খরচ কমিয়ে আনাসহ নিরাপদ মুলা উৎপাদন নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর কীটতত্ত্ব বিভাগের একটি গবেষক দল আগামী সপ্তাহে মুলার জমি পরিদর্শন করবেন। সেই সাথে মুলা চাষিদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের কথা চলছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, গোমতী চরের পলি মাটিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ হয়। এখানের চরে ৪হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। চরে আগাম মুলা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাই তারা টানা ৩-৪বারও মুলা চাষ করেন।