গোমতী পাড়ে বাড়ছে বিনোদন কেন্দ্র

 

আল-আমিন কিবরিয়া।।
কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দাদের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে গোমতী নদীর বাঁধ এলাকা। ইট পাথরের এ শহরের অদূরে গোমতী নদী। আদর্শ সদর উপজেলায় নদীর দুই পাড়ে পিচঢালা সড়ক। এ সড়কে বিকেলে সবুজ সমারোহের মনোরম পরিবেশ আর রাতের আলোকসজ্জা প্রশান্তি দেয় শহরবাসী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের।
গোমতী পাড়কে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে বাঁধ ও নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট, বিনোদন পার্ক ও ছোট বড় শতাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান। এসবে প্রতিদিন ভিড় জমায় হাজার হাজার ভোজনরসিক। এর মধ্যে গোমতী কফি হাউজ, গোমতী বিলাস, ক্যাফে৩৫০০, হোটেল রিলাক্স পয়েন্ট, বাগান বিলাস, গোমতী পাড়ের ফুড ব্যাংক, ত্রিপুরার চা ঘর, শ্রীমঙ্গল চা ঘর, কাশ্মীরী চা ঘর উল্লেখযোগ্য।
কথা হয়েছে বাঁধ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা, দোকানি, চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অন্তত ১৫ জনের সাথে। তাদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাশেম ও অটোরিকশা চালক রবিউল জানান, নদীর বাঁধের সড়কে সন্ধ্যা থেকে রাতে বাড়ছে মোটর বাইকারদের উৎপাত। বাইকের অতিরিক্ত গতি, বেপরোয়া ড্রাইভিং ও শব্দ দূষণ অতিষ্ঠ করে তুলেছে বাঁধ এলাকার পরিবেশ। কিছুদিন আগে একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল আরোহী অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। এ এলাকায় বাইকারদের উৎপাত ঠেকাতে প্রশাসন একটু ভালো ভাবে নজর দেওয়া দরকার।
বাঁধ এলাকায় বিকেলে ঘুরতে এসে চান্দিনার রেদোয়ান আহমেদ জানান, এখানে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। জায়গাটা অনেক সুন্দর।


জগন্নাথপুর ইউনিয়নের অরন্যপুর গ্রামের মো. আল আমিন। প্রতিদিনই বিভিন্ন সময় মোটরসাইকেল নিয়ে আসা হয় জেলা সদরে। তিনি জানান, স্কুল কলেজ পড়–ুয়া তরুণ-কিশোররা এই সড়কে বেপরোয়া ভাবে মোটরসাইকেল চালায়। তাদের কারণে সকাল সন্ধ্যা এ সড়ক দিয়ে চলাফেরা করতে ভয় হয়।
বাঁধের উপরে ছোলা-বুট বিক্রি করেন ষাটোর্ধ্ব এক দম্পতি। তারা জানন, প্রতিদিন বিকেল থেকে রাতে বেচাকেনা ভালোই হয়। এসব বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে।
কয়েকজন রেস্তোরাঁর মালিক জানান, লোকসমাগম বেশি থাকায় বেচা-বিক্রি ভালোই হয়। নদীর দুই পাড়ে গড়ে ওঠা ছোট বড় রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও বিনোদন পার্কে প্রতিদিন ভিড় জমে হাজার হাজার ভোজনরসিকদের।
কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন, গোমতীর বাঁধে প্রতিদিন লোকজন প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে আসে। অনেকেই বেপরোয়াভাবে ড্রাইভিং করে। অতিরিক্ত গতির কারণে কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আমরা এ দুর্ঘটনা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে এবং বর্ডার এলাকা হওয়ার কারণে মাদক রোধে টিক্কারচর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছি। পুলিশ ওই এলাকা নিয়ে সবসময় তৎপর থাকে, যাতে সেখানে ঘুরতে এসে লোকজন হয়রানির শিকার না হয়।

আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শোরমা বলেন, গোমতী নদীর বাঁধ এলাকা পানি উনয়ন বোর্ডের অধীনে। আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা ভেবে দেখবো।