চিরনিদ্রায় শায়িত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আফজল খান

 

সর্বস্তরের মানুষের শোক-শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, কুমিল্লার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, ১৪ দলের জেলা সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আফজল খান।
তিন দফা জানাজা, রাষ্ট্র্রীয় মর্যাদা শেষে বুধবার বিকালে কুমিল্লা নগরীর গোবিন্দপুর এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। কুমিল্লা টাউন হল মাঠে তাঁর সর্বশেষ জানাজায় হাজার হাজার শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। এসময় টাউন হলের পাশের সব সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে মানুষ জানাযায় অংশ নেন।
টাউন হল মাঠের জানাজায় তাঁর কফিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল-মামুন স্বপন ও দলের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর।
স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল-মামুন স্বপন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এমপি, অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খান এমপি, নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল এমপি, আফজল খানের ছেলে এফবিসিসিআই পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। এসময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, আফজল খানের মেয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপি, কুমিল্লার পাবলিক প্রসিকিউটর জহিরুল ইসলাম সেলিম, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন, যুগ্ম সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী, এলডিপি মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) কেন্দ্রীয় নেতা এয়ার আহমেদ সেলিম। এসময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন,আফজল খান মন্ত্রী এমপি না হলেও তিনি গণমানুষের নেতা হয়েছিলেন। সব রাজনীতিবিদ গণমানুষের নেতা হতে পারেন না। দলের দুঃসময়ে তিনি সব সময় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যেতেন। কুমিল্লার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আফজল খান এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে বেঁচে থাকবেন।
এর আগে সকালে নগরীর ঠাকুরপাড়া খান বাড়ি জামে মসজিদে প্রথম এবং কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট আফজল খানের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে নগরীর ঠাকুরপাড়া সংলগ্ন গোবিন্দপুর এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখ্য- আফজল খান মঙ্গলবার বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি কুমিল্লায় ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে সমাদৃত হন।