চৌদ্দগ্রামে নেই বাজার কমিটি, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।

inside post
দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত চৌদ্দগ্রাম বাজার। লেনদেন হয় কোটি কোটি টাকা। রয়েছে প্রায় সব’কটি ব্যাংকের শাখা। গুরুত্ব বিবেচনায় উপজেলার প্রাণকেন্দ্র বলা হয় এই বাজারকে। রয়েছে বার’শ এর অধিক ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এই বাজার থেকে সরকারি রাজস্বখাতে জমা জয় বিপুল টাকা। জুলাই বিপ্লবের পরে পালিয়ে যায় বাজার পরিচালনা কমিটি। তারপর থেকে বাজারে নেই নৈশপ্রহরী। প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা। ক্রেতা বিক্রেতা, দোকানি দোকানি জড়াচ্ছেন মারামারিতে। বাজার পরিচালনা কমিটি না থাকায় দিনের পর দিন বাড়ছে বিশৃঙ্খলা।
সরজমিন বুধবার(৫ মার্চ) বাজার ঘুরে দেখা যায়, আশু শাহ ফকির সড়কে বাজারে প্রবেশ করার একমাত্র পথটি দোকানিরা সামনের অংশ ভাড়া দিয়ে প্রায় বন্ধ করে ফেলেছেন। একজন ত্রেতা বাজার সদাই করে মুল সড়কে উঠতে অনেক বেগ পেতে হয়।
রামরয়গ্রাম থেকে মাছ ক্রয় করতে আসা আফজাল হক বলেন, রমজানে খুব কষ্ট করে ভিড় ঠেলে বাজারে প্রবেশ করেছি; দুই কেজি মাছ ক্রয় করেছি। সংকুচিত রাস্তায় তীব্র ভিড় ঠেলে বের হওয়া কঠিন মনে হচ্ছে। একই অবস্থা বাজারের সবচাইতে ব্যস্ত প্রবেশ পথ ওয়াপদা গলি। সেখানে সপ্তাহে দুই দিন বেচাকেনা হয় হাঁস মোরগ। তিন চাকার যান অটো মিশুক স্ট্যান্ড বানিয়ে অবরুদ্ধ প্রায় পুরো সড়ক। প্রতিনিয়ত ক্রেতা ও অটো মিশুক চালকরা লিপ্ত হচ্ছেন ঝগড়ায়।
ওয়াপদা রোডের ব্যবসায়ী হাফেজ আলী আকবর বলেন, বাজার পরিচালনা কমিটি না থাকায় চলাচলের রাস্তা নিয়ে অটো মিশুক চালক ও ক্রেতাদের প্রায়ই হয় বাকবিতণ্ডা। প্রতি বছর রমজানের ঈদে কাপড় ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা থাকে ভাল ব্যবসার। কিন্তু অটো মিশুক চালকরা রাস্তা বন্ধ করে ফেলায় বাজারে ক্রেতা প্রবেশ করতে পারেনা। সারাদিন জট লেগে থাকে।
হাজী জুলু মিয়া মার্কেটের মোবাইল দোকানি মাসুদ জানান, মহাসড়ক লাগোয়া আমার দোকান। ভোর ছয়টার সময় কলাপসিবল গেট ও সাটারের তালা কেটে চুরি হয় আমার দোকান। বাজারে নৈশপ্রহরী থাকলে এই ঘটনা ঘটতো না।
সাব রেজিস্টার অফিসের পাশে মক্রম আলী মার্কেটে উদয়ন কম্পিউটার, ডট কম কম্পিউটার সহ পরপর কয়েকটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্য ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গত সতের বছর বাজারে নির্বাচিত কোনো বাজার কমিটি ছিল না। সাবেক রেলমন্ত্রী ৫ বছর পরপর তার আশীর্বাদপুষ্ট লোকদের নিয়ে করা কমিটি ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দিতেন। যা দিয়ে বাজারের উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায়নি। আগষ্ট পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজার পরিচালনা কমিটি ও নৈশপ্রহরী বিহীন চলছে। যে কারণে বাড়ছে চুরি চিনতাইয়ের ঘটনা, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা।
এ বিষয়ে জানতে আগস্ট পূর্ববর্তী বাজার কমিটির সভাপতি আকতার হোসেন পাটোয়ারী ও সেক্রেটারি ফারুক আহমেদ খাঁ শামীমকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
সাবেক নির্বাচিত কমিটির(২০০৬) সেক্রেটারি খোরশেদ আলম জানান, আমরা নির্বাচিত কমিটি ছিলাম, আমাদের সময়ে এমন বিশৃঙ্খলা ছিল না; পর্যাপ্ত নৈশপ্রহরী ছিল। দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত বাজার কমিটি না থাকায় বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। কমিটি না থাকায় নেই নৈশপ্রহরী। যার ফলে অহরহ ঘটছে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। দ্রুত ব্যবসায়ীদের দ্বারা নির্বাচিত বাজার কমিটি গঠন হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে জানানসাবেক এই ব্যবসায়ী নেতা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, বাজার ব্যবসায়ী কমিটি ব্যবসায়ীরাই নির্বাচিত করবে। তারা চাইলে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করবো।
আরো পড়ুন