ছাতু শরবত বিক্রিতে স্বপ্ন বোনা
ইলিয়াছ হোসাইন।।
জয় বণিক। কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দিঘিরপাড়ে বাসা। ৩মাস ধরে ধর্মসাগরপাড় নগর উদ্যানে ছাতু শরবত বিক্রি করছেন। তিনি ভিক্টোরিয়া কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স ১ম বর্ষে পড়ছেন। স্বপ্ন দেখছেন একজন উদ্যোক্তা হওয়ার। কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মুখোমুখি-ধর্মসাগর পাড়ে একবারে উত্তরে পশ্চিম দিকের গেইটের একপাশে বসে ছাতু,মধু,মিষ্টি জিরা,নিমপাতা,মেথি,অশ্বগাথা,আলবুষি,কালিজিরা,অলিভ অয়েল,শিমুলমুল,সোনাপাতা,সজনেপাতা, সিয়াসিডসহ হরেক রকমের ভেষজ উদ্ভিদের গুড়োর পসরা সাজিয়ে বসেন। তার দোকানের মূল আকর্ষণ ছাতুর শরবত। প্রতি গ্লাস শরবত ২০টাকা মূল্যে বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫গ্লাস শরবত বিক্রি করতে পারেন। শরবতে থাকছে ছাতু,মধু,সিয়াসিড,মিষ্টি জিরা, লেবু এবং পিংক সল্ট। ফিল্টারিং পানিতে একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়া এ শরবত খাচ্ছেন উদ্যানে সকালে শরীর চর্চা করতে আসা ব্যক্তিরা। বসেন ভোর ৫.৩০থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত। তিনি বলেন, দু ‘মাস ধরে এখানে বসছি। দিন ৩০-৩৫ গ্লাস শরবত বিক্রি করতে পারি। সবাই ছাতু শরবতের সাথে তেমন পরিচিত নয়তো তাই বিক্রি কম হচ্ছে। লেগে আছি আশা করি সবাই যখন ছাতু শরবতের গুণাগুণ বুঝবে তখন বেচা-বিক্রি বাড়বে। এ শরবতের গুণাগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “বদ হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণসহ শরীরের পানি ধরে রাখতে এ শরবত অতুলনীয় কাজ করে।
শরবত খেতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,আমি জয়ের নিকট নিয়মিত ছাতুর শরবত খাই। খুবই উৎকৃষ্ট মানের শরবত। প্রাকৃতিক এবং উপকারী। ব্যায়াম করে এসে খাই সাথে সাথে ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। আমি খাই,আপনারাও খেয়ে দেখতে পারেন।
বিসিকের মেসার্স কুমিল্লা ফ্লাওয়ার মিলের পরিচালক সৈয়দ গোলাম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, আমি আগে নিয়মিত গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেতাম। জয়ের ছাতুর শরবত নিয়মিত খাওয়ার ফলে এখন আর গ্যাসের ঔষধ খেতে হয়না। আমার পায়খানাও ক্লিয়ার হয়। হাঁটার শক্তিও বেশি পাই।
অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি নিয়মিত পার্কে ইয়োগা করি। আমার জানামতে জয় বণিক একজন ইয়োগা ট্রেইনার। পাশাপাশি ভেষজ উদ্ভিদ সম্বন্ধে পড়া-লেখাও আছে তার। তাই বলা যায় এখানের শরবত স্বাস্থ্যকর। আমাদের শরীরটা যাতে প্রাকৃতিক নিয়মের তৈরি তাই আমাদের খাদ্যতালিকায় খাবারগুলোও প্রাকৃতিক হওয়া চাই। ছাতু প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি তো,এর শরবত শরীরকে বুস্টার এবং দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। আসলে তিনি এখানে শুধু ব্যবসার জন্য চালু করেননি, আমাদের কি খাওয়া দরকার সেটা সমাজের মানুষকে জানান দেওয়ার উদ্দ্যশ্যেই মূলত চালু করেছেন। এতে আহামরি তেমন লাভও হয়না। আমাদের সমাজে যে রোগের ছড়াছড়ি সেই জন্যে প্রাকৃতিক খাবারের তুলনা হয় না। আসলে মানুষ ভালো থাকতে হলে প্রকৃতির কাছেই আসতে হবে।