ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বৃদ্ধ বাবার আকুতি
হাসিবুল ইসলাম সজীব ।।
আমার মিরাজ কল দিয়ে বলছিলো বাবা বোনদের বাড়িতে ঈদের বাজারের বিষয়ে তুমি কোন চিন্তা করো না। আমি মালিকের সাথে হিসাবে করে টাকা পাঠিয়ে দিবো, তারপর বাড়িতে আসবো ঈদ করবার জন্য। ওরা আমার মিরাজকে বাঁচতে দেয় নাই। এই বলে আহাজারি করতে থাকেন নিহত কাভার্ডভ্যান চালক মিরাজের বৃদ্ধ বাবা আবদুল হক।
তিনি মঙ্গলবার কুমিল্লা নগরীতে সাংবাদিকদের নিকট এই আকুতি জানান। মিরাজ লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানার পূর্ব চর সীতা গ্রামের আবদুল হক মিয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) প্রতিদিনের নেয় ঐদিনও কাভার্ড-ভ্যান চালক মিরাজ তার গাড়িতে (রেজি:নং চট্রো-ট ১১-৭৬১৯) যোগে মালামাল নিয়ে ঢাকা হতে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। সকালে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে সেন্টমার্টিন পরিবহনে (রেজি:নং- ঢাকা মেট্রো-ব-১২-২৯৬৮) বাসটি বেপরোয়া গতিতে এসে কাভার্ড-ভ্যানের পিছনে ধাক্কা দেয়,এতে কাভার্ড-ভ্যানের ড্রাইভিং সিটে থাকা মিরাজ তার গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে কাভার্ড-ভ্যানের চাকার নিচে চলে যায়। ঘটনাস্থলে মিরাজ মারা যান।
নিহতের বৃদ্ধ বাবা জানান, মৃত্যুর আগের দিন সন্ধ্যায় আমার ছেলে কল দিয়ে বলে বাবা- মাকে বলিয়েন আমার জন্য দোয়া করতে। তুমি ঠিক মত ঔষধ খেয়ে নিও। সকালে শুনতে পাই আমার সোনার মানিক গাড়ির নিচে পড়ে মারা গেছে। বাবার কাঁধে ছেলের লাশ কতোটা কষ্টের সেটা শুধু একজন বাবাই জানেন। আমার মিরাজ মারা যায়নি ওরা আমার ছেলেকে খুন করেছে। তারা যদি বেপরোয়া বাসটি না চালাতো তাহলে আমার ছেলে আজ আমার বুকে থাকতো। আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। আমার মত আর কোন বাবা মায়ের কোল যাতে খালি না হয়। এসব বলে চোখের পানি ছেড়ে দেন নিহত মিরাজের বৃদ্ধ বাবা।
এবিষয়ে নিহতের বড় ভাই দিদার বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় সেন্টমার্টিন পরিবহনে (রেজি:নং- ঢাকা মেট্রো-ব-১২-২৯৬৮) বাসটিসহ অজ্ঞাতনামা চালকের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে ।