ছেলের জন্য চার বছর ধরে কাঁদছেন কলেজ অধ্যক্ষ মা
প্রতিনিধি।।
ছেলে শাবান খানের হত্যার বিচার দাবিতে কুমিল্লায় চার বছর ধরে কাঁদছেন এক কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি কুমিল্লা নগরীর বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা ডা. লিয়াকত আলীর স্ত্রী কুমিল্লা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ রাফেয়া আক্তার ডেইজি। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি তাদের ছেলে শাবাত খানের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ হত্যাকা-ের চার বছর পার হলেও আসামিদের হদিস পায়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)র সদস্যরা।
শাবাতের পরিবার জানায়,২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে মানিব্যাগ- মোবাইল ফোন রেখে বাসা থেকে বের হন শাবাত খান। পরদিন ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি সকাল ৮টায় গোমতী নদীর পালপাড়া ব্রিজের নিচে হাত পা বাঁধা অবস্থায় শাবাতের মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। ওই সময় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হক সংবাদিকদের জানান,নিহতের দুই হাত বাঁধা অবস্থায় কালো স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো ছিল। কোমরে চাবির রিং ঝুলানো ছিল। রাতের যে কোন সময় হত্যার পর তাকে নদীতে ফেলে দেয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কি কারণে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তদন্তের পর বলা যাবে। মরদেহ উদ্বারের একদিন পর শাবাতদের বাবা কোতোয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। একমাসের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি পিবিআই কুমিল্লাতে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার চার বছর পার হলো, চারজন তদন্তকর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে।
শাবাত খানের বড় বোন ডা. শারমিন খান বলেন, শাবাত আইটি ব্যবসায় পাশাপাশি টার্কি মুরগি ফার্ম ও কাপড়ের পার্টনারশিপ ব্যবসা করতেন। আমরা পুলিশকে সব তথ্য উপাত্ত দিয়েছি। তবুও কেন পুলিশ আমার ভাইয়ের খুনিদের গ্রেফতার করতে পারছে না বিষয়টি আমার বোধগম্য না। ছোট ভাইটি খুন হওয়ার পর আমার আব্বা আম্মা শোকে অসুস্থ হয়ে গেছেন।
সন্তান হারিয়ে কথা কারো সাথে তেমন কথা বলেন না ডা. লেয়াকত আলী খান। শাবাতের মা রাফেয়া আক্তার ডেইজি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ঘটনার আলামত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টটে তা পরিস্কার। তবুও কেন চার বছর পার হলেও খুনের রহস্য উন্মোচন করতে পারছে না পুলিশ। আমরা বোধ হয় এ জন্মে ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও তাদের শাস্তি দেখে যেতে পারবো না।
শাবাত হত্যার মামলার দায়িত্বে রয়েছেন পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক মফজল খান। তিনি জানান, এই মামলাটির কোন কূল কিনারা করতে পারছেন না। আদৌ পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, শাবাত যে মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করতো সেটির লক ভাঙ্গা তাদের দ্বারা সম্ভব হচ্ছে না। যদি মোবাইল ফোনের লকটি খোলা যেতো তাহলে হয়তো কোন ক্লু পাওয়া যেত।