টুকরো টুকরো স্মৃতি

।। গাজীউল হক সোহাগ ।।
ওয়ান ইলেভেনের সময়। একজন অধ্যক্ষ কলেজের ছয় লাখ টাকার হিসেবে গড়মিল করেছেন। কলেজের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি তদন্তে সত্যতা পেয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন করি। প্রতিবেদন প্রকাশের পর অধ্যক্ষ মহোদয় কলেজ তহবিলে টাকা ফেরত দেন। যেইদিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, সেইদিন ইফতারের সময় ওই অধ্যক্ষের এক আত্মীয় আমাকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে বললেন, ওয়ান ইলেভেনের সরকার যাক, তিনি আমাকে দেখে নেবেন। গত ১৪ বছর ধরে উনি আমাকে দেখেন, আমিও ওনাকে দেখি! এই স্মৃতি এখনও ঝলমল করে।
২. তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সম্ভাব্য প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লায় এসেছেন। তিনি কুমিল্লায় এসে বিএনপি নেতাদের নিয়ে মাজার জিয়ারত করেন। এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করি। পরে তিনি আর প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেননি। এই রিপোর্ট করে মজা পেয়েছিলাম।
৩. ২০০৯ সালের পরের ঘটনা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের নিউ হোস্টেলে প্রথম আলো পত্রিকা রাখা নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে দুইটি পক্ষ হয়। তখন ছাত্রশিবির সমর্থিত ছেলেরা অন্য একটি পত্রিকা হোস্টেলে রাখার জন্য চাপাচাপি করে। এক পর্যায়ে এ নিয়ে হোস্টেলে ভোটাভুটি হয়। এতে প্রথম আলো শতাধিক ভোট পায়। ওদের পছন্দের পত্রিকার পক্ষে ভোট পড়ে ১৪ টির মতো। এই খবর পরদিন প্রথম আলোতে ছাপা হয়। নিজের লেখা এই খবর পড়ে নিজেই হেসেছিলাম।
৪. ঢাকায় কুমিল্লার আওয়ামী লীগের এক এমপির বিরুদ্ধে ছয় এমপির গোপন বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছাত্রলীগের তিন নেতা আমাকে বিষয়টি জানান। এরপর আমি বৈঠকে থাকা তিনজন মাননীয় এমপি মহোদয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলি। তিনজনই আমাকে বৈঠকের বিষয়বস্তু জানিয়েছেন। এ নিয়ে একটি এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট করি। এ রিপোর্ট বেশ সাড়া জাগায়।
৫.
আমোদ এর জন্ম ১৯৫৫ সালের ৫ মে। ৫.৫.৫৫। একদিন আমোদ অফিসে বাকীন রাব্বী ভাইয়ের সামনে বসা। সামসুননাহার রাব্বী খালাম্মার ইন্টারভিউ নেব। বাকীন ভাইয়েরও। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে খালাম্মা বললেন, সোহাগকে আমাদের প্রথম সংখ্যাটা দেখাও। আমি আমোদ এর উদ্বোধনী সংখ্যা হাতে নিলাম। একটা ভাললাগা কাজ করল। এতো আগের একটা সংখ্যা হাতে নিয়ে।
এ রকম কতো স্মৃতি আছে বলে শেষ করা যাবে না। কুমিল্লায় ১৮ বছরের কর্মজীবন নানা স্মৃতিতে ভরা।

লেখক : প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা।