ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় সদর রসুলপুর স্টেশনে তুলকালাম

স্টেশনে ভাঙচুর, একাধিক ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ,স্টেশন মাস্টার আহত

তৈয়বুর রহমান সোহেল।।
ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় কুমিল্লার সদর রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশিতা, ঢাকা মেইল ও ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় ঢাকা মেইলের লোকোমাস্টার, সদর রসুলপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ও স্টেশনের পয়েন্টসম্যান আহত হয়েছেন। এঘটনায় গ্রেফতার নয়জনকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ।


রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা অভিমুখী ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেন সদর রসুলপুর স্টেশনে প্রবেশ করে। এদিন আখাউড়া জংশনে ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ হয়ে যাবার কারণে ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লার সদর রসুলপুর স্টেশনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করে। রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাকা অভিমুখী ঢাকা মেইলও সদর রসুলপুর স্টেশন অতিক্রম করছিল। এর কিছু সময় ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশিতা ট্রেনটিও সদর রসুলপুর স্টেশন অতিক্রম করে। এর আগেই বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশনে ভাঙচুর শুরু করে। তারা ট্রেনকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। ভাঙচুর চলাকালীন সময়েই ঢাকা মেইল ও তূর্ণা নিশিতা ট্রেন সদর রসুলপুর স্টেশন অতিক্রম করতে থাকায় ওইসব ট্রেনেও বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা পাথর নিক্ষেপ করে। এসময় ঢাকা মেইল ট্রেনের লোকোমাস্টারের মাথায় পাথরের আঘাত লাগে। তূর্ণা নিশিতা ট্রেনের কয়েকটি জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। হামলার ঘটনায় আহত হন সদর রসুলপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান ও পয়েন্টসম্যান।
সূত্র আরো জানায়, আখাউড়া স্টেশনে ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ থাকায় এদিন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রায় সবগুলো ট্রেনই শিডিউল বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলরুটের লাকসাম থেকে গঙ্গাসাগর স্টেশন পর্যন্ত ৩৮টি সিগন্যাল মোটর চুরি হওয়ায় কাছাকাছি অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি দিতে পারেননি রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিস।


রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা-২ ফেরদৌস আহমেদ জানান, আখাউড়ায় ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ থাকায় বিভিন্ন লাইন বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্টেশনের ধারণক্ষমতা কমে যায়। যার কারণে ট্রেনগুলো পাস দিতে বিলম্ব ঘটে। এতে যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনায় রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম জানান, হামলার ঘটনায় সদর রসুলপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮০-৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। নয় আসামিকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।