তার পেশা চিকিৎসা- নেশা গাছ বিতরণ!
অফিস রিপোর্টার ।।
তার পেশা চিকিৎসা। অবসরে নেশা গাছ, বীজ ও কলম বিতরণ। প্রায় এক দশক ধরে তিনি এই কাজ করে আসছেন। বিনামূল্যে তিনি গাছ বিতরণ করছেন সবুজকে চারদিকে ছড়িয়ে দিতে। বিতরণ করেছেন ৫০ হাজারের বেশি গাছ। তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রভাষক ডাঃ মোঃ আবু নাঈম। তার কুমিল্লা সদর উপজেলার গুণানন্দী গ্রামের বাড়িটিকেও তিনি সবুজে সাজিয়েছেন। অনেকে বাড়িটিকে উদ্ভিদ জাদুঘরও বলে থাকেন। বাড়িটি দেখতে স্থানীয়রা প্রায় ভিড় করেন। বাড়ির দুইটি ছাদ,আঙিনা,বারান্দা সিঁড়ি সর্বত্র বর্ণিল উদ্ভিদের সমাহার। সেখানে বিরল,বিদেশি বিভিন্ন প্রকারের ফুল, অর্কিড ও ক্যাকটাসের সংগ্রহ রয়েছে।
তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি মনে হয় একটি উদ্ভিদ জাদুঘর। তার বাড়িতে রয়েছে আসল পারুল ফুল, মাংকি ব্রাশ ফ্লাওয়ার, লাল কদম, বারমাসি কদম, সাদা মণিলতা, নীল মণিলতা, সোলান্ড্রা, পেন্ডা ফুলসহ পাঁচ শতাধিক রকমের ফুল। জলজ গাছের মধ্যে রয়েছে দেশি শাপলা, থাই শাপলা, জলজ লজ্জাবতী, ফ্ল্যাগ প্ল্যান্ট, স্বর্ণ কুমুদ, জল গোলাপ, জলজ পপি ও পানি ফল গাছ। ক্যাকটাস রয়েছে ৫০-৬০ প্রজাতির। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জিমনো,ম্যামিলারিয়া,ওলডম্যান, সাকুলেন্ট ও জীবন্ত পাথর। অর্কিডের মধ্যে রয়েছে শতাধিক প্রজাতি ডেনড্রবিয়াম, ক্যাটেলিয়া, ফ্যালনপ্সিস, ভ্যান্ডা ও মোকারা প্রভৃতি। এছাড়া মাটিতে জন্মানো ২০ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। তার একটি ফেসবুক গ্রুপও রয়েছে। গ্রুপের নাম কুমিল্লা গার্ডের্নাস সোসাইটি। পেইজ জুড়ে বর্ণিল ফুল আর উদ্ভিদের ছবি। এই গ্রুপের মাধ্যমে কুমিল্লার ২০ হাজার তরুণ-তরুণী ফুল-ফলের বীজ,কান্ড,কলম বিনামূল্যে বিনিময় করেন।
ডাঃ আবু নাইম বলেন, বিনামূল্যে সবাইকে গাছের চারা দিয়ে থাকে। আমরা প্রতি তিনমাস পরপর মেলা করি, যেখানে উদ্ভিদ গুলো বিতরণ হয়। তাছাড়া উৎসাহ প্রদানের লক্ষে যারা নতুন বাগান করে তাদের ও সেরা বাগানীদের পুরস্কৃত করি। প্রকৃতি প্রেমীদের একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। আমরা বিশ্বাস করি সমষ্টিগতভাবে যেকোন কাজকে সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
সামাজিক বন বিভাগ কুমিল্লার বিভাগীয় কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য গাছের বিকল্প নেই। দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই সময়ে ডা.নাইমের এই প্রচেষ্টা তরুণদের সবুজ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করবে।