নজরুলের কুমিল্লা আগমনের শতবর্ষে কুবিতে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার
কুবি প্রতিনিধি।।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কুমিল্লায় আগমনের শতবর্ষ উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার আয়োজন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই উপলক্ষে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে ‘চেনা নজরুল, অচেনা নজরুল’ শিরোনামে দু’দিনব্যাপী এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম দিন প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, নজরুল আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে এমন কেউ নেই যারা নজরুলের বিদ্রোহী, সাম্যবাদী, লিচু চোর, রণ সংগীত শুনে নাই। এসব বলতে গেলে কুমিল্লা থেকেই সূত্রপাত।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, নজরুলকে নিয়ে নানা দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। নজরুল শুধু দুইটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। একদিন নজরুল সারা বিশ্বে পরিচিতি পাবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র কবি যাকে তার কবিতা নামের সঙ্গে মিলিত হয়ে বিদ্রোহী কবি বলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, আসানসোল’র বাংলা বিভাগের প্রধান ড. মোনালিসা দাস বলেন, বিদ্রোহী সত্ত্বা কাজী নজরুলের জীবনে সর্বাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। এই সত্ত্বা তাকে রাজনৈতিক সচেতন করে গড়ে তুলেছিল।
প্রথম দিনের ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান এবং কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম।
দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রধান আলোচক ছিলেন সংগীতশিল্পী ও কবি নজরুলের নাতনি খিলখিল কাজী। আলোচক ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ মাওলা, অধ্যাপক ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান এবং ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সায়ক মুখার্জি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শামসুজ্জামান মিলকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ ওয়েবিনারের সঞ্চালনা করেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া আফরোজ।
উল্লেখ্য-জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল কুমিল্লা। জাতীয় কবির প্রেম, বিয়ে, প্রকাশ্যে সুরকার-গায়ক ও অভিনয়সহ অনেক কিছুই শুরু হয়েছিল কুমিল্লা থেকে। এখানের বিভিন্ন স্থানে, বাড়িতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আড্ডা, সংগীতচর্চা ও কবিতা আবৃত্তি করতেন তিনি। পাশাপাশি লিখতেন গান ও কবিতা। ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট পাঁচবার কুমিল্লায় এসেছিলেন তিনি।