নতুন মেয়রের কাছে নগরবাসীর যত প্রত্যাশা

মন্তব্য প্রতিবেদন

হাসিবুল ইসলাম সজিব ।।
দেশের সবচেয়ে আদি পৌরসভা গুলোর মধ্যে কুমিল্লা পৌরসভা একটি। বয়স দুশো বছর। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম ৫৩ দশমিক ০৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ২৭টি ওয়ার্ডে বিস্তৃত। তার আওতায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে। এই প্রতিষ্ঠানটিতে আগে কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভা নামে দুটি পৌরসভা ছিল। ১০ জুলাই, ২০১১ তারিখে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এক অধ্যাদেশ জারি করে প্রশাসন। পৌরসভা দুটিকে একটি সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদা দেয়। কোর্ট রোড, কুমিল্লা শহরের একটি প্রধান সড়ক যা পূর্বে ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডের একটি অংশ ছিল। অধুনা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নির্মিত হওয়ার আগে এটি ছিল চট্টগ্রাম বন্দরসহ দক্ষিণ পূর্ব বাংলাদেশের সাথে দেশের বাকি অংশের একমাত্র সংযোগ সড়কের অংশ।
০৫ জানুয়ারি ২০১২ সাথে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জনগণের ভোটে প্রথম মেয়র পদে নির্বাচিত হয় মনিরুল হক সাক্কু। ৩০ মার্চ ২০১৭ সালে ২য় নির্বাচনেও নির্বাচিত হন তিনি। ৩য় মেয়াদে ২০২২ সালে ১৫ জুন জনগণ নতুন করে মেয়র নির্বাচিত করেন আরফানুল হক রিফাতকে। মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এতে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় উপ নির্বাচন। দুইবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন কুমিল্লা-০৬ আসনের সংসদ সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহার উদ্দিন বাহারের মেয়ে ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। যিনি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন প্রথম নারী ও তরুণ মেয়র। তার কাছে নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যানজট নিরসন,সুপরিকল্পিত ভাবে ভবন নির্মাণ ছাড়াও আরো বেশ কিছু উন্নয়নের আশা করছেন নগরবাসী। এদের মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ফুটপাত দখল, বৃদ্ধনিধন,মাকড়সা জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইন্টারনেট/ডিসের ক্যাবল, বিভিন্ন স্থানে ময়লার ভাগাড় ইত্যাদি।
ফুটপাতঃ নগরীর রাজাগঞ্জ হতে কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর পর্যন্ত ফুটপাত গুলো এমন ভাবে দখল করা যেন সেগুলে নিজের তৈরি দোকানের অংশ। যার ফলে তৈরি হচ্ছে যানযট।
বিদ্যুতিক খুঁটিতে ইন্টারনেট/ডিস ক্যাবলঃ নগরী সকল বৈদ্যুতিক খুঁটিতে মাকড়সা জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইন্টারনেট/ ডিস ক্যাবলের তার। তার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে রাস্তার উপর পড়ে থাকে তার গুলো এতে ঘটে সড়ক ুূর্ঘটনা।
যানযটঃ বর্তমান কুমিল্লা শহরের যানযট রাজধানী ঢাকায় যানজটে পরিণত হয়েছে। শহরের মেইন সড়ক গুলোর মধ্যে প্রতিনিয়ত জ্যাম লেগে থাকে। এতে করে মুমুর্ষূ রোগী নিয়ে স্বজনরা পড়েন বিপাকে। মাঝে মাঝে এ জ্যামের কারণে হসপাতালে পৌঁছানোর আগে রোগী গাড়িতে মারা যান। শিক্ষার্থীরা সময় মতো যেতে পারছেন স্কুল কলেজে। অফিস কর্মচারীরা সময় মতো যেতে পারছেনা।
বৃক্ষনিধনঃ অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ও রাস্তা-ঘাট উন্নয়নের নামে অবাধে বৃক্ষ নিধন চলছে। একটা সময় নগরীর সড়ক গুলোর পাশে প্রচুর গাছপালা ছিল। নগরীর কোন বহুতল ভবনের ছাদ থেকে দেখা যেতো সবুজ আর সবুজ। যেখানে এখন দেখলে মনে হয় মরুভূমি। কিছু কিছু সড়কের পাশে গাছপালার কোন চিহ্ন নেই। উল্লেখযোগ্য সড়ক হলো টমছম ব্রিজ হতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ রোড়, জাঙ্গালিয়া হতে পূবালী চত্বর, পূবালী চত্বর হতে চকবাজার ইত্যাদি
ময়লার ভাগাড়ঃ নগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশে রয়েছে ময়লা ভাগাড়। যাতে মানুষের নৃত্য ব্যবহারিত সকল ময়লা আবর্জনা ভাগাড় যা কিছু কিছু স্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে করে জনসাধারণ স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে। সাথে শ্বাসকষ্ট কষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণ এখান থেকে সৃষ্টি হচ্ছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থাঃ পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। যাতে ভোগান্তিতে পড়ে হাজার ও সাধারণ জনগণ। জলাবদ্ধতার কারণে শহরে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ধরনের পানি বাহিত রোগী। এতে বেশি বিপাকে পড়তে ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে।
এসবসহ নানা প্রত্যাশা নতুন মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনার কাছে নগরবাসীর।