নায়ক মান্নার মেকাপম্যানের প্রাণী ও বৃক্ষ প্রেম !

 

আবু সুফিয়ান রাসেল।।
চার ফুট ও আট ফুটের ঘর। এ ঘরটি সেলুনের কাজে ব্যবহৃত হয়। সেলুনের মালিক প্রাণী আর বৃক্ষের সাথে মিতালি তৈরি করেছেন। তার সেলুনে আছে সিরাজী, গোল্লা, তিতি কবুতর,  ঘুঘু পাখি, খরগোশ, কোয়েল পাখি, মোরগ, অস্ট্রেলিয়ান সাদা ইঁদুর। বিভিন্ন টব আর প্লাস্টিকের বোতলে আছে নানান গাছ। পাখি আর প্রাণিদের দেখতে আসে শিশুরা।
নগরীর থিরাপুকুর পাড় আল্লাহর দান সেলুনের চিত্র এমন। সেলুনের ভিতরে বাইরে নায়ক মান্নার বিভিন্ন ছবি লাগানো। সাথে নিজের ছবি দিয়ে লিখা কুমিল্লার প্রিয় মান্না। এ সেলুনের মালিক মো. মান্না। তার প্রকৃত নাম মো. আনিছুর রহমান মিন্টু।
১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্র অভিনেতা মান্নার প্রধান মেকআপ ম্যান ছিলেন। ডাক পেয়েছেন খল নায়ক চরিত্রে কাজ করার।  ২০০৮ সালে নায়ক মান্নার মৃত্যুর পর মেকআপম্যানের কাজ ছেড়ে দেন। চার বছর পর সেলুন ব্যবসায় আসেন। থিরাপুকুর পাড় এলাকার মানুষের নিকট সেলুন মান্না হিসাবে পরিচিত।
সেলুন মান্না জানান, মান্না ভাইয়ের সাথে কাজের স্মৃতি কোন ভাবে ভুলতে পারি না। আমাকে খুব আদর করতেন। ওনার চুলকাটা, সেভ করা, মেকআপ সব কাজ আমি করতাম। থাকতাম পারিবারিক সদস্যের মতো। মান্না ভাইয়ের পুরাতন শার্ট, প্যান্ট, ফতুয়া আমার ঘরে। ২০ সেট কাপড় আমাকে দিয়ে গেছেন। ভাইয়ের কথা মনে পড়লে কাপড় জড়িয়ে কাঁদি। বুকের ব্যাথায় মারা গেছে, টাঙ্গাইলের বাড়িতে কবরে আমি নেমেছি লাশ রাখতে। মান্না ভাই মানুষকে ভালোবাসতেন, পশু পাখি পোষতেন। গাছ লাগাতেন। গাছ আর পাখির মাঝে আমি মান্না ভাইকে দেখি। আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা মান্না ভাইয়ের ছেলে সিয়াম ইলতিমাসের ম্যাকআপ ম্যান হিসাবে কাজ করার। এর জন্য পরিচালক থেকে কোন বেতন নেবো না।
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. আবু নাঈম জানান, সবার গাছগাছালির প্রতি ভালোবাসা থাকা দরকার। একজন নরসুন্দর বৃক্ষ আর পাখির প্রতি যে প্রেম। এটি সমাজের প্রতি ম্যাসেজ। কারণ বৃক্ষ আর প্রাণি ছাড়া আমরা বাঁচতে পারবো না।