নাসিরনগরে ১৩ ইউনিয়নের বেশিরভাগেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী

inside post
দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নেই বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ভোটগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ঘোষিত ফলাফলে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা প্রতীকে জয় পেয়েছেন ছয়জন এবং অন্যান্য প্রতীকে বিজয়ী হয়েছেন সাতজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পুতুল রাণী দাস (নৌকা) প্রতীকে চার হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিজ মিয়া (চশমা) পেয়েছেন তিন হাজার ৮৫৭ ভোট। বুড়িশ্বর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল চৌধুরী (আনারস) নয় হাজার ৪৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ.টি.এম মোজাম্মেল সরকার (নৌকা) পেয়েছেন সাত হাজার ৪৬৩ ভোট। কুণ্ডা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দিন ভূঞা (আনারস) পাঁচ হাজার ৯৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমরাও খান (চশমা) পেয়েছেন চার হাজার ৫১১ ভোট। গোকর্ণ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মো. শাহীন (ঘোড়া) পাঁচ হাজার ৫১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছোয়াব মোহাম্মদ হৃতুল (নৌকা) পেয়েছেন চার হাজার ৯৯৩ ভোট। গুনিয়াউক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিতু মিয়া (নৌকা) তিন হাজার ৬৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল হক (আনারস) পেয়েছেন দুই হাজার ৫৭৯ ভোট।
হরিপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক মিয়া (আনারস) ছয় হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল মিয়া (চশমা) পেয়েছেন চার হাজার ১৬৯ ভোট। পূর্বভাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আক্তার মিয়া (নৌকা) প্রতীকে চার হাজার ৩১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন (আনারস) প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৯১৬ ভোট। ফান্দাউক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুকুজ্জামান ফারুক (নৌকা) ছয় হাজার ১০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিকুল ইসলাম (ঘোড়া) পেয়েছেন দুই হাজার ৮০৮ ভোট। ধরমন্ডল ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম (আনারস) ছয় হাজার ৭৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত বাহার উদ্দিন চৌধুরী (নৌকা) পেয়েছেন চার হাজার ২৮০ ভোট।
চাপরতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মনসুর আলী ভূঁইয়া (নৌকা) দুই হাজার ৯২৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ (চশমা) পেয়েছেন দুই হাজার ৯০৭ ভোট। গোয়ালনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজহারুল হক চৌধুরী (ঘোড়া) চার হাজার ১৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত কিরণ মিয়া (নৌকা) পেয়েছেন চার হাজার ১২১ ভোট। চাতলপাড় ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম (চশমা) ১১ হাজার ৩৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আব্দুল আহাদ (নৌকা) পেয়েছেন সাত হাজার ৩২৯ ভোট। ভলাকুট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত রুবেল মিয়া (নৌকা) আট হাজার ৭৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত আলী (আনারস) পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৩৩ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা নাগাদ চলে ভোটগ্রহণ। প্রতিটি ইউনিয়ন এলাকায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। ফলে হয়নি কোনোরূপ সহিংসতা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং বেশ উৎসবমুখরতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বাকি ছয়টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এ ফলাফল প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বচন সমন্বয়কারী হালিমা খাতুন ফলাফল প্রকাশ করেন বলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম নিশ্চিত করেন।
আরো পড়ুন