পায়ে হেঁটে সমগ্র বাংলাদেশ

পায়ে হেঁটে পুরো বাংলাদেশ ঘুরেছেন তরুণ সাইফুল ইসলাম শান্ত। ৭৫ দিনে তিন হাজার ০৫ কিলোমিটার অতিক্রম করেন। গত ২৯ মার্চ কক্সবাজারের শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে পৌঁছান কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এই তরুণ। বুধবার কক্সবাজার থেকে টেফনাফের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে ফোনে সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, গত ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় হয়ে সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারের অভিমুখে যাত্রা করেন। এ সময় শান্ত ৩৮টি জেলা সদর এবং ২৬টি উপজেলা সদরে পদযাত্রা করেন। তিনটি বিষয়ে তিনি সচেতনতা তৈরির কাজ করেন। সেগুলো হচ্ছে জীবন বাঁচাতে রক্তদান, প্লাস্টিক ব্যবহারে সতর্কতা এবং বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল স্কুল-কলেজে গিয়ে এসব নিয়ে কথা বলার। কিন্তু করোনার কারণে তখন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিলো। তাই বিভিন্ন ক্লাবে যাই, জনসমাগমের জায়গায় গিয়ে কথা বলি। ’

পুরো দেশ ঘুরে উচ্ছ্বসিত সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, এবার তিনি বেরিয়ে পড়তে চান বিশ্ব ভ্রমণে।

কক্সবাজারে পৌঁছালে সাইফুল ইসলামকে শহীদ মিনারে সংবর্ধনা দেন স্থানীয় সাঁতারু ও দৌঁড়বিদরা। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
সাইফুল ইসলাম শান্ত দেশের বৃহৎ রানিং গ্রুপগুলোর সক্রিয় সদস্য এবং কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় ‘দেবিদ্বার রানার্স’ নামে ২ হাজার সদস্যের একটি রানিং গ্রুপ পরিচালনা করছেন।

তিনি জানান,ভোর থেকে হাঁটা শুরু করতেন। সন্ধ্যার পর থামতেন। সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পরিচিত মানুষের বাসায় থেকেছি। আবার কখনো ডাকবাংলো বা হোটেলে। একা একাই হেঁটেছি। শুরু করার সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে দিতেন। দিনের শেষে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় স্থানীয় সাইক্লিস্ট ও রানার গ্রুপগুলোর সদস্যরা এগিয়ে আসতেন।’

প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৪৭ কিলোমিটার হাঁটেন সাইফুল। কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার পৌর এলাকার বড় আলমপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও করুণা বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্য দ্বিতীয় সন্তান সাইফুল ইসলাম। ১৯৯৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর তার জন্ম। তিনি দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন মডেল পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১১সালে মাধ্যমিক এবং ২০১৩সালে দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ঢাকার দনিয়া বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞানে ২০১৮সালে বিএসসি সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। সাইফুলের ছোটবেলা থেকেই হেঁটে হেঁটে ঘুরার প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল। তবে সেটা বেড়ে গেছে স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার পর। একটু একটু করে হাঁটার দূরত্ব বাড়িয়েছেন সাইফুল।