প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক ট্রেন গেল ভারতে

 

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন পহেলা নভেম্বর
 
মো.ফজলে রাব্বি,আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ।।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের উদ্বোধনের দুইদিন আগে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক ট্রেন গেল ভারতের আগরতলায়। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৬ জন স্টাফ নিয়ে আখাউড়া গঙ্গাসাগর নব নির্মিত রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৫টি বগি করে একটি ট্রায়াল ট্রেন ভারতের আগরতলা নিশ্চিন্তপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষামূলক (ট্রায়াল ট্রেন হিসেবে) ছেড়ে যায়। এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখে প্রথম ট্রায়াল রান বা ট্রেন চলে বহুল কাঙ্খিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে।
পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সফল হওয়ায় আগামী পহেলা নভেম্বর বুধবার দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটির উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তীতে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে ট্রেন নিয়ে ভারতের আগরতলায় যাওয়ায় ট্রেন চালক মো. মাফুজুর রহমান বলেন, একজন চালক হিসেবে প্রথম বারের মতো আমাদের ৬ জন স্টাফ নিয়ে আগরতলায় প্রবেশ করছি। আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশের প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া জানান, এখন উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত আছে রেলপথটি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এই মেঘা প্রকল্পটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে।


টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা বলেন, প্রকল্প, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। উদ্বোধনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে রেলপথ। এই রেলপথে ৭৯ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে।
আখাউড়া গঙ্গাসাগর রেল স্টেশনের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজকে আমার প্রথম কর্ম দিবস। প্রথম কর্ম দিবস হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানায়, আমাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। আজকে প্রথম ৬ জন স্টাফের ইমিগ্রেশন কাজ করেছি। তারাই প্রথম ইমিগ্রেশন করেছে এই নতুন গঙ্গাসাগর ইমিগ্রেশনে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত এ রেলপথ চালু হলে আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটারের দূরত্ব কমে ৩৫০ কিলোমিটার হবে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় দেড় বছর। করোনাসহ নানা কারণে পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়।

আখাউড়া-আগরতলায় প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে বাংলাদেশ অংশে সাড়ে ৬ কিলোমিটার ও আগরতলা অংশে ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশ বাস্তবায়নে ব্যয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। চলতি মাসে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আখাউড়া-আগরতলার রেলপথ উদ্বোধনের কথা রয়েছে।