প্রশিক্ষণ আর ব্যবসা অনুদানে ভাগ্য বদলেছে কুমিল্লার ১ হাজারো নারীর জীবন

আবু সুফিয়ান রাসেল।।

সঠিক প্রশিক্ষণ আর এককালিন ক্ষুদ্র ব্যবসা অনুদানে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে কুমিল্লা নগরীর এক হাজার ৩১১ জন নারীর। এছাড়াও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ৪১৩ জন কিশোরীকে ৯ হাজার টাকা উপহার প্রদান করা হয়েছে। ৭৩০ জন গর্ভবতী মাকে পুষ্টি কর খাদ্য উপকরণ ও সচেতনতা তৈরি, নারী সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিবন্ধিদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ৬৯৭টি পরিবারে ১৫০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের অংশে ড্রেন ও ফুটপাত তৈরি, টিউবওয়েল-লেট্রিন, সোলার লাইট স্থাপন করা হয়েছে। করোনা বিষয়ে সচেতনতাসহ দরিদ্র পরিবারে ৭২ হাজার সাবান দেওয়া হয়েছে। আর এ সকল কাজ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (এলআইইউপিসিপি) ও জাতীয় নগর দারিদ্র হ্রাসকরণ কর্মসূচি (এনইউপিআরপি) এর আওতায় এসকল কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

আমাদের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু।

আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে মেয়র আরো বলেন, ২১ হাজার ৩৬০ বর্গমিটার আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ, ১০ হাজার ৩৪৯ বর্গমিটার সেবক কলোনি নির্মাণ, এক হাজার ৭০ বর্গমিটার আঞ্চলিক অফিস বর্ধিতকরণ, ৪০ হাজার ৪৭৪ বর্গমিটার মোস্তফাপুর ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন ও আট হাজার ১৯৫ বর্গমিটার চকবাজার বাস টার্মিনাল উন্নয়ন কাজের জন্য ১৫শ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। ২০২৪ সালের মধ্যে বদলে যাবে কুমিল্লার চেহরা।

কুমিল্লার পুরাতন গোমতী নদীসহ ডিসি পুকুর ও রাজবাড়ি পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন, ১৪৬টি কবরস্থান ও শ্মশান উন্নয়ন, সাতটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৩০৫ দশমিক ১৪ কিলোমিটার রাস্তা, ২০৩ দশমিক ০৯ কিলোমিটার ড্রেন এবং ১৩ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ কাজ করা হবে।
মাসুদা বেগমের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন নগরীর ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, প্রযেক্টের উপদেষ্টা মো. কবির হোসেন মজুমদার, টাউন ম্যানেজার ইমানুর শিকদার, নাদিয়া ইসলাম প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মাসুদা বেগম বলেন, মফিজাবাদ কলোনী, নোনাবাদ কলোনী, টিক্কাচর, গাংচর, কাটাবিল, নবগ্রাম, কাশারীপট্টিসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অল্প আয়ের মানুষের মাঝে আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছি। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি- সিডিসি ক্লাষ্টার সদস্যদের আন্তরিকতার কারণে এ প্রযেক্ট যথাযথ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা সঠিক ব্যক্তিকে বাঁচাই করে সেবাটি দিতে পেরেছি। সে জন্য প্রযেক্ট সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।

এ প্রকল্পের সদস্য আনোয়ারা বেগম বলেন, এখান থেকে সেলাই কাজ শিখে ঘরে থেকে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করি। আমার দুইজন মেয়ে আছে, তারাও এখন কাজ পারে। রোজার ঈদে অনেক সেলাই কাজের অর্ডার আছে। পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারি। ছোট মেয়ের আগ্রহ পার্লারের কাজে তাকে এ প্রযেক্টে ফ্রি ভাবে পার্লারের কাজ শিখার সুযোগ দিয়েছি।

টিক্কাচর এলাকার বাসিন্দা, স্কুল ছাত্রী মোসা. মোহসানা মীম জানান, সংগ্রামী পরিবার থেকে আমাদের বেড়ে উঠা। বাবা অল্প আয়ের মানুষ। নবম-দশম শ্রেণিতে উঠলে বিয়ের আলোচনা হয়। প্রকল্পের অর্থায়নে আমরা শিক্ষা উপকরণ ক্রয় করি। পড়া-লেখায় কোন ব্যাঘাত ঘটেনি।