পয়াতের জলার পাঁচ হাজার কৃষকের আনন্দ-বেদনার গল্প

 

মহিউদ্দিন মোল্লা ।।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পয়াতের জলা। চলতি বছরের প্রথম দিকে ওই এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে খাল খনন করা। খনন পরবর্তীতে উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। শনিবার বুড়িচং উপজেলার পয়াতের জলার পাশে আগানগর দিঘিরচর এলাকায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ওই এলাকার ৫০০০ কৃষকের আনন্দ বেদনার গল্প তুলে ধরেন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো: আবদুর রৌফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি বিভাগের মহাপরিচালক মো: আফজল হোসেন,কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ফারজানা খানম,বিএডিসি‘র পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান মো: ফেরদৌস রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিএডিসি কুমিল্লার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন, বিনা কুমিল্লা উপ-কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান এবং বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. আফরিনা আক্তার প্রমুখ।

হরিপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন,সদর ইউনিয়নের খলিল মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন বলেন, খাল খননের ফলে ২০বছর পর পয়াতের জলায় আউশ ধানের সোনালি হাসি দেখা গেছে। খালে স্থানীয়রা মাছ ধরতে পারছে। খালের পাড়ে চলাচলের পথ হয়েছে। এজন্য বিএডিসির প্রকল্প পরিচালককে তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি খালের আরো কিছু অংশ খননের আবেদন জানান।
সূত্রমতে,কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর, বাকশীমুল,ষোলনল ও রাজাপুর ইউনিয়নের একটি অংশ নিয়ে পয়াতের জলা। জলাবদ্ধতা সেই এলাকার কৃষি ও কৃষকের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। এই কারণে পয়াতের জলার ১২ হাজার একর আবাদী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যার প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী ৫০০০ এর অধিক কৃষক পরিবার। পয়াতের জলার কৃষকরা রোপা-আমন ধান লাগাতে পারেন না। আবার কিছু কৃষক বোরো ধান আবাদ করলেও আগাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তা ঘরে তুলতে পারেন না। চলতি বছরের শুরুতে মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে জলার চারপাশের খালের ২৫ কি.মি. খাল পুনঃখনন কাজ করা হচ্ছে। এতে এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকাংশে দূর হয়েছে। বেড়েছে ফসল উৎপাদন।

বিএডিসি কুমিল্লার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, পয়াতের জলায় ২০ বছর জলাবদ্ধতা ছিলো। স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড.আবদুর রাজ্জাক ও প্রয়াত এমপি আবদুল মতিন খসরু স্যারের পরামর্শে এইখানে খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। খাল খননে এখানের জলাবদ্ধতা দূর হয়। ফসল উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

কৃষকদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন,খালের আরো কিছু অংশ খননের বাকী রয়েছে। সেটিও দ্রুত খনন করা হবে।