ফসলের মাঠ থেকে টলটলে পানির খাল
অফিস রিপোর্টার ।।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কাজীপাড়া খাল ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কানাইল খাল দুইটি পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে হাসছে তিন হাজার একর ফসলি জমি। উপকৃত হবে প্রায় দুই হাজার কৃষক পরিবার।
স্থানীয় কৃষক ও বিএডিসির সূত্রমতে, চান্দিনার কাজীপাড়া খালটি সাড়ে তিন কিলোমিটার ও চৌদ্দগ্রামের কানাই খালটি চার কিলোমিটার খনন করে বিএডিসি কুমিল্লা। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও বন্যায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দূরীকরণের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার একর জমির ফসল রক্ষা পাবে। তাছাড়া খালে ধারণকৃত পানি শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এদিকে কানাইল খালটি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের লালাপুর ব্রিজের পশ্চিম পাশ হতে কানাইল খাল নাম ধারণ করে। খালটি খননে প্রায় এক হাজার একর জমির ফসল রক্ষা পাবে।
সরেজমিন চান্দিনার বাড়েরা এলাকায় গিয়ে জানা যায়, এখানে যুগ যুগ ধরে খনন না হওয়ায় কাজীপাড়াখাল ভরাট হয়ে যায়। সেখানে অনেকে ধান চাষ করতেন। পানির সংকট ও জলাবদ্ধতায় অনেক জমি অনাবাদী থাকে। এক সময় ধান চাষ হতো। এখন খনন শেষ হওয়ায় খালে পানি এসেছে। কৃষকরা মনের আনন্দে খাল থেকে পানি তুলে ধান ও সবজির খেতে দিচ্ছেন।
চান্দিনার গোরামারা গ্রামের রবিউল্লাহ,সাইফুল ইসলাম ও চৌদ্দগ্রামের ছাতিয়ানি এলাকার কামাল হোসেন বলেন,খাল গুলো প্রায় মরে গিয়েছিলো। পাশের জামি গুলো কখনও জলাবদ্ধতা কখনও পানি শূন্যতায় পড়তো। তারা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাল গুলোও খননের দাবি জানান।
খাল দুইটি পুনঃ খনন কাজ শেষে ১৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। চান্দিনার গড়ামারা এলাকায় কাজীপাড়া খালটি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। এসময় বিএডিসি চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, বিএডিসি সদস্য পরিচালক (ক্ষুদ্রসেচ) যুগ্ম সচিব আমিরুল ইসলাম, বিএডিসি (ক্ষুদ্রসেচ) প্রধান প্রকৌশলী আবদুল করিম, বিএডিসি কুমিল্লা চাঁদপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে অতিথিরা চান্দিনা উপজেলা সদরে বিএডিসির ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন বহু মাত্রিক দার্শনিক। তাই তিনি কৃষি ও সমবায় দিয়ে দেশকে গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তাকে সেই সময় দেইনি। তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি দরদী মানুষ। তার কাজ গুলো বিএডিসি বাস্তবায়ন করছে।
এদিকে সোমবার বিকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নে কানাইল খালের পুনঃ খনন কাজের উদ্বোধন করেন বিএডিসি চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।
বিএডিসি কুমিল্লার তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,কৃষিমন্ত্রী মহোদয়,এমপি মহোদয়রা ও বিএডিসির চেয়ারম্যান মহোদয়সহ অন্যান্যদেও পরামর্শে কুমিল্লায় বিএডিসির সেচ বিভাগ কাজ করছে। দুই উপজেলার দুইটি খালে আমাদের প্রায় ৮৩ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। আশা করছি খাল দুইটি খননে ওই এলাকার ফসল উৎপাদন আরো বাড়বে।
বিএডিসি চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন ৭৮৬কোটি টাকা। সেখান থেকে তিনি ১০১ কোটি টাকা কৃষির জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। কৃষির প্রতি সেই দরদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অব্যাহত রেখেছেন। চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় দুইটি খাল পুনঃ খনন কাজের উদ্বোধন করা হলো। এতে জলাবদ্ধতা দূর হবে, কৃষির উন্নয়ন হবে।