বিএনপির কর্মীকে ছাড়ালেন আওয়ামী লীগ নেত্রী !

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দুলাল মিয়া বিএনপির সমর্থক। এখন হেফাজতের মামলার আসামী। তাকে গ্রপ্তারের পর দলীয় প্রভাব খাটিয়ে থানা হাজত থেকে দুলালকে ছাড়িয়ে নিলেন আওয়ামী লীগ নেত্রী! ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরীর এহেন ঘটনা এখন টক অব দ্যা ডিস্ট্রিক্টে পরিণত। এদিকে জেলা কমিটির কাছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দিয়েছেন লিখিত অভিযোগ।
সূত্রে প্রকাশ, জেলার আশুগঞ্জ থানা পুলিশ গত ১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের বিএনপি সমর্থক দুলাল মিয়াকে হেফাজতের তাণ্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করে। এ ঘটনার পর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ‘আওয়ামী পরিবারের সদস্য’ প্রত্যয়ন দিয়ে থানা হাজত থেকে ছাড়িয়ে নেন বিএনপির সমর্থক দুলাল মিয়াকে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের জন্ম দেয়। এক পর্যায়ে নিজ দলের পক্ষ থেকেই জোসনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে গত ১৭ এপ্রিল শনিবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত আবেদনও করেন শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার। আবেদনের অনুলিপি আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকেও দেওয়া হয়েছে।
আবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের সাথে বিএনপি-জামায়াত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তাণ্ডব চালানোর জন্য আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের বিএনপি সমর্থক দুলাল মিয়া লোক সরবরাহ করেন। বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবগত আছেন। এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৫.০৪) দুলালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আবেদনে আরও বলা হয়, জোসনা চৌধুরী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দুলালকে আওয়ামী পরিবারের সদস্য প্রত্যয়ন দিয়ে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। যা স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য লজ্জাজনক। জোসনা স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের সমর্থকদের একে একে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার জন্য নিজেই একটি গ্রুপ তৈরি করেন।
অভিযোগকারী শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেত্রী হয়ে জোসনার এমন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সেজন্য লিখিত অভিযোগ করেছি। দেখি কী হয়।’ অভিযুক্ত আশুগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুইটি গ্রুপ। যারা আমাদের সাথে চলাফেরা করছে, তাদেরকে বিএনপির তালিকায় নাম দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। দুলালের বাবা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেন। পুলিশ যাচাই-বাছাই করে তারপর তাকে ছেড়েছে। ‘ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘আশুগঞ্জে আমি কথা বলেছি। এগুলো স্থানীয় অভিযোগ। এরা একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষ। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।’