বোরকা পরা তিন অস্ত্রধারীকে খুঁজছে পুলিশ

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে গুলিতে হত্যার ঘটনায় বোরকা পরিহিত তিনজনকে খুঁজছে পুলিশ। সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। হত্যাকা-ের ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যায়, খুব কাছে থেকে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে গুলি করেন তিনজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি। গুলি করার সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হত্যাকা-ের কয়েক সেকেন্ড আগে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জামাল। তার পেছনেই দুই দিকে মুখ করা দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এসময় কালো বোরকা পরিহিত তিনজন ব্যক্তিকে দ্রুততার সঙ্গে সামনের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়। জামাল দোকান থেকে বের হতেই পেছনের দিকের একটি অটোরিকশা সামনের দিকে অগ্রসর হয়। বোরকা পরিহিতরা পিস্তল তাক করতেই কিছুটা ব্যাকফুটে গিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন জামাল। অটোরিকশাটিও পেছনে চলে আসে। এর আগেই গুলি শুরু হয়। দুইজন একটু পেছন থেকে, আরেকজন খুব কাছাকাছি থেকে গুলি করেন। কালো শার্ট পরা যুবলীগ নেতা জামাল অটোরিকশার সামনে রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে লক্ষ্য করে আরো দুটি গুলি ছোড়েন কাছাকাছি থেকে গুলি করা ব্যক্তিটি। তার কপাল ও বুকে গুলি লাগে। এরপর তারা দ্রুততার সাথে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনের বোরকার মাথার অংশ সরে যায়। তখন ছোট চুল দেখা যায়। হত্যাকারীদের পায়ে একই রকমের জুতা ছিল। উচ্চতা ও হাঁটার ধরনে তাদের পুরুষ বলে মনে হয়েছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনের হাত থেকে পিস্তল পড়ে যেতে দেখা যায়। হত্যাকা-ের সময় আশেপাশের মানুষজনকে আত্মরক্ষায় ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়েই হত্যাকা- প্রত্যক্ষ করেন। হত্যাকা-ের সময়ের সিসিটিভির এরকম দুইটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে আইনশৃংখলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট পরিদর্শন করে। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। গৌরিপুর বাজারে গুমোট ভাব বিরাজ করছে।
সোমবার সন্ধ্যায় নিহতের বড় ভাই কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মামলার বিষয়ে দাউদকান্দির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ভুইয়া জানান, স্বজনরা জামালের মরদেহ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল যান। সেখানে নিহত জামালের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এখনো জামালের স্বজনরা বাড়িতে আসেনি। যে কারণে মামলা হয়নি। রাতে নাগাদ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হতে পারে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা শুটারদের ধরতে শতভাগ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছি। অন্যান্য সংস্থাও আমাদের সাথে কাজ করছে। হত্যাকা-ের কারণ শত্রুতা নাকি অন্য কিছু সে বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য- রবিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে গুলিতে হত্যা করা হয় জেলার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে। তিতাস উপজেলায় বাড়ি হলেও তিনি ব্যবসা করতেন পাশের দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজারে।