ব্রাহ্মণপাড়ায় ড্রেজারে মাটি উত্তোলনে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

 

প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় অবৈধ খননযন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) দিয়ে ফসলি জমি নষ্ট করে দিনের পর দিন মাটি উত্তোলন ও ভরাট করা হচ্ছে। আব্দুল কাদির নামের এক ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী এই কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে এই অপকর্ম করে আসছেন বলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি বলেন জানান স্থানীয় কৃষকরা।
অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির (৫৫) সুনামগঞ্জেরবাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ধান্যদৌল বাজারের উত্তর পাশে স-মিল সংলগ্ন এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় লোকজন ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ পূর্বপাড়া এলাকায় স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য নাসিমা আক্তারের বাড়ি সংলগ্ন স্থানীয় এক ব্যক্তির জমি থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মাটি উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি ও পকুর ভরাট করে আসছেন। বর্তমানে তিনি স্থানীয় ওই নারী ইউপি সদস্যের বাড়ির পাশে একটি জমি ভরাট করছেন। তার পাশেই অন্য এক ব্যক্তির একটি জমি প্রস্তুত করে রেখেছেন মাটি ভরাটের জন্য।
এ ছাড়া অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির ধান্যদৌল কালামুড়িয়া বিলের একটি জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করে নাগাইশ গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকায় বড়ধুশিয়া সংলগ্ন বজলু মিয়ার বাড়ির পাশে আরও একটি ভরাট করছেন। খনন হওয়া জমির পাশেরে জমি গুলোর মালিক অবৈধ ড্রেজার মেশিন মালিক ও মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদিরের এমন অপকর্ম থেকে পরিত্রাণ চেয়ে স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
স্থানীয় লোকজনের প্রশ্ন, অবৈধ ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে বর্তমান সকার ও প্রশাসন যেখানে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সে অবস্থায় একজন ইউপি সদস্যের বাড়ির সামনে দীর্ঘদিন ধরে একটি অবৈধ ড্রেজার মেশিন চলে কি ভাবে?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, যেখানে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে, তার পাশের দাগেই আমার পাঁচ বিঘা তিন ফসলি জমি রয়েছে। এই জমিতে বছরে তিন মৌসুমেই ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করি। এখানে পুকুর খনন করা হলে আমার জমি ভেঙে যাবে। আমি পুকুর খনন বন্ধের দাবি জানাই।
ড্রেজার মেশিন মালিক আব্দুল কাদির বলেন, আমি এ ভাবে এখানে ড্রেজার ব্যবসা করতে আসিনি। প্রশাসনের লোকজন ও উপরের মহলসহ সকল সাইট ম্যানেজ করেই এই এলাকায় ড্রেজার ব্যবসা করছি। আমাকে কেউ কিছু বলার এবং আমার বিরুদ্ধে কেউ কোন কিছু করার সুযোগ নেই। কে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিল, কে কি বলল তাতে আমার কিছুই যায় আসে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে পুকুর খনন ও ফসলি জমি ভরাট করার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।