ভাইদের ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে গুম, বাবা গ্রেপ্তার

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পৈত্রি জমিজমা নিয়ে ভাইদের সাথে বিরোধ। নি:সন্তান বড় ভাইয়ের সম্পত্তি গ্রাসের পায়তারা ছোট ভাইদের। সেই মানসে বড় ভাইকে ফাঁসিয়ে স্বার্থোদ্ধারে নিজের শিশুকন্যা খাদিজাকে গুম করে এবার নিজেই ফেঁসে গেলেন ছোট ভাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করাসহ বড় ভাইয়ের মামলায় মঈনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পাঠালো জেলহাজতে।
বুধবার (১৯ আগস্ট) ভোর রাতে কসবা থানার পুলিশ নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে সাত বছরের কন্যাশিশু খাদিজাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আবুল খায়ের গেদু মিয়ার রজুকৃত মামলায় তারই ছোট ভাই উপজেলার শিমরাইল গ্রামের আবদুল মালেকের পুত্র মঈনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
ভুক্তভোগীর পরিবার, এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শিমরাইল গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের চার পুত্রের মধ্যে পৈত্রিক ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। আবুল খায়ের গেদু মিয়ার সন্তানাদি না থাকায় তার অর্থ সম্পদ গ্রাস করতে তারই ছোট তিন ভাই মঈনুল ইসলাম, টেনু মিয়া এবং টোকন মিয়া নানান ফন্দিফিকির করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মঈনুলের সাত বছর বয়েসী শিশুকন্যা খাদিজা আক্তারকে লুকিয়ে রেখে আবুল খায়ের গেদু মিয়ার বিরুদ্ধে গুমের মামলা সাজায়। তারা মঈনুলের খাদিজাকে গত ১৫ আগস্ট নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জে মঈনুলের ভায়রা কামালের বাসায় পাঠিয়ে গ্রামে মাইকিং করে খাদিজা হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং কসবা থানায় বড় ভাই আবুল খায়ের গেদু মিয়া ও তার স্ত্রীকে আসামী করে গুমের মামলা রজু করেন। এরই মাঝে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাদিজার অবস্থান নিশ্চিত হয়। এরই প্রক্ষিতে কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আসাদুল ইসলাম বুধবার ভোরে নেত্রকোনা জেলার শ্যামগঞ্জে মঈনুলের ভায়রা কামালের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু খাদিজাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় কথিত গুমের মামলার আসামী আবুল খায়ের গেদু বাদী হয়ে মামলা করার পর মঈনুলকে গ্রেপ্তার করে টুলিশ। গেদুর কোনো সন্তানাদি নেই। ফলে সম্পত্তির লোভেই তার তিন ভাই একযোগ হয়ে সম্পত্তি আত্মসাত করতেই শিশু খাদিজাকে গুমের নাটক সাজায় বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খাদিজার বাবা মঈনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বড় ভাই আবুল খায়ের গেদু বাদী হয়ে থানায় রুজুকৃত মামলার প্রেক্ষিতেই আদালতের মাধ্যমে তাকে পাঠানো হয়েছে জেলহাজতে।