‘মাইলস্টোনকে পুঁজি করে আওয়ীমী লীগ আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে’

inside post
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা ভেবেছিলাম ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম মাইলস্টোন কলেজের আগুনে আওয়ামী লীগ আলু পোড়া দিয়ে খেতে চেয়েছে। মাইলস্টোনের ঘটনাকে পুঁজি করে আওয়ীমী লীগ আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান করবো, বাংলাদেশের স্বার্থে ফ্যাসিবাদবিরোধী বক্তব্যে রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করতে হবে।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে জুলাই পদযাত্রা পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছে সকাল ১০ টায় সার্কিট হাউজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেন। এরপর সাড়ে ১১ টার দিকে এনসিপি’র নেতৃবৃন্দরা শহরের কাউতলী মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হওয়া পদযাত্রাটি জেলা শহরের ফারুকী পার্ক, মৌড়াইল, কলেজ মোড়, রেলগেইট, টি.এ রোড প্রদক্ষিণ করে পৌর মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশে মিলিত হন। পদযাত্রায় অংশ নেন এনসিপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী,যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহদি, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ আরও অনেকে
সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ্ বলেন, অতীতের শাসকরা আমাদের একটি ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিয়ে গেছে। আপনি রাস্তায় বের হন, বাসে চাপা পড়ে মরবেন। আপনি হাসপাতালে যান, চিকিৎসার অভাবে মারা যাবেন। বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাবেন, লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যাবেন। বাংলাদেশে একটি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তার অবস্থা আমাদের দিয়ে যায়নি। এই রাষ্ট্রের কাছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই।
হাসনাত আব্দুল্লাহ্ আরও বলেন, আমরা একটি পুনর্গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা চেয়েছিলাম। দু:খজনক বিষয় হচ্ছে আমাদের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন ইংরেজিতে অনার্স, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বাংলায় অনার্স। যারা দক্ষ এবং যোগ্য মানুষ, তাদেরকে সরকারে বসিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়ে দেয়া উচিত ছিলো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কেমন হওয়া দরকার। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়- আমরা দেখেছি একটা ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, একটা অযোগ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে দিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিচালনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কি কোনো ডাক্তার ছিলো না?
এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্যাসের মাধ্যমে দেশের রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলার গ্যাসের চাহিদা পূরণ হলেও এখানকার মানুষ গ্যাস থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আমরা এমন রাষ্ট্র চাই না যেখানে উন্নয়ন হলেও নিজের এলাকার মানুষ বঞ্চিত হয়। উন্নয়ন শুধু ঢাকায় নয়, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় সুষম বন্টন করতে হবে।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ফ্যাসিবাদ বাদী সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। দেশের পক্ষে ইনসাফের পক্ষে সর্বদা লড়াই করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ প্রয়োজনে জীবন দিয়েছে কিন্তু আপোষ করেনি। আমরা জানি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে বলেই তারা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের রক্ত চক্ষু শূল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া। কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বার বার আন্দোলন তৈরি হয়েছে। ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন উন্নয়ন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিলো।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপি’র সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহদি প্রমুখ। এসময় এনসিপি’র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।জনসমাবেশ শেষ করে এনসিপি’র নেতৃবৃন্দ হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
আরো পড়ুন