ময়নামতি জাদুঘরের ঝড়ে পড়া গাছ নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ
অফিস রিপোর্টার।।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের দিন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ময়নামতি শালবন বিহার ও জাদুঘর এলাকা। ওইদিন ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে গবাদি পশুসহ অনেক পাখিও মারা যায়। গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ার কারণে শালবন ও ময়নামতি জাদুঘরের সীমানা দেওয়ালের র্যালিং ভেঙে যায়। ওই গাছগুলো সরানোর ব্যবস্থা করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক কর্মকর্তা। ওই গাছ কেটে সরানো নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান হাসিবুল হাসান সুমির বিরুদ্ধে। হাসিবুল হাসান সুমি দাবি করেন, এ গাছগুলো বঙ্গবন্ধুর উপহার দেওয়া। ১৯৭২-১৯৭৫ এর মধ্যবর্তী যেকোনো সময়ে বঙ্গবন্ধু ২১০টি গাছ উপহার দেন শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের জন্য। গাছগুলো কেটে নেন আঞ্চলিক কর্মকর্তা। তাছাড়া ১৯৭৫ সালে শালবন এলাকায় আসেন বঙ্গবন্ধু। তখন তিনি জাদুঘর ও বিহারের উন্নয়নের জন্য ২৫০০ টাকা দান করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিভিন্ন সময়ে কুমিল্লায় আসেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক প্রতিষ্ঠানকে অর্থ সহায়তাও করেন। তবে স্বাধীনতার পর তিনি কখনোই শালবন বিহার এলাকায় আসেননি। এমনকি শালবন বিহারে যে গাছগুলো লাগানো হয়েছে, তা ৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে।
স্থানীয় সালমানপুরের বাসিন্দা সালেহ আহমেদ বলেন, আমার বয়স ৬৯। এ এলাকার পুরো ইতিহাস আমার জানা। বঙ্গবন্ধু কখনো এখানে আসেননি। গাছগুলো নব্বইয়ের দশকে আমার বাবার চোখের সামনে লাগানো। ওই সময় কাস্টোডিয়ান ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান, যা আমার স্পষ্ট মনে আছে।
কাউন্সিলর ফজল আলী জানান, বঙ্গবন্ধু ৭৫-এ শালবন এলাকায় এসেছেন, এটা মিথ্যাাচার ও বানোয়াট সংবাদ। আমি প্রবীণ রাজনীতিবিদ। এখানকার মাটি ও মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে মিশে আছি। শালবন বিহার এলাকায় কী হয়েছে, আর কী হয়নি-তার সবই আমার জানা।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমান বলেন,‘খুব খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছ কেটে তা দিয়ে জাদুঘর এলাকার জন্য ফার্নিচার বানাই। কিছু গাছের গুঁড়ি এখনো রেখে দেওয়া হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে আমি এগুলো বেচে দিতাম।