ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন চালককে মারধর : ট্রেন চলাচল বন্ধ

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের দুই চালককে পিটিয়েছে বেপরোয়া বাইকাররা।শনিবার (২৯ মে) বিকেলে স্টেশন সংলগ্ন রেলক্রসিং গেইট এলাকায় এহেন ঘটনার পর ডাউন লাইনে ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট রেলপথে টানা এক ঘন্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। আহত ট্রেন চালক আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও জসিম উদ্দিনকে (৪০) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলো মালবাহী একটি ট্রেন।দুপুর অনুমান আড়াইটার দিকে জেলা শহরের টি.এ রোড থেকে কাউতলীর দিকে ৬-৭টি মোটরসাইকেলের বহর যাচ্ছিলো। তারা টি.এ রোডের শেষ মাথায় রেলের লেভেলক্রসিং অতিক্রমকালে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে লেভেল ক্রসিং অতিক্রমকালে রেললাইনের কাছাকাছি মোটরসাইকেলের বহর দেখে ট্রেন থেকে একাধিকবার হুইসেল দেয়া হয় এবং রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান বাঁশি বাজান। কিন্তু মোটরসাইকেলের বহরের কেউই সিগন্যাল না মেনে রেললাইন অতিক্রম হতে গেলে পেছনের একটি মোটরসাইকেল ট্রেনের ইঞ্জিনের আটকে পড়লে তা ধীরগতিতে সামনে টেনে নিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক দ্রুত এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলে আটকে পড়া দুই তরুণকে টেনে নামিয়ে উদ্ধার করেন। এরমধ্যে আরাফাত (২০) নামের এক তরুণ আহত হন। ট্রেনটি শিমরাইলকান্দি এলাকায় গিয়ে থামালে মোটরসাইকেলের বহরে থাকা অন্যান্য তরুণরা ট্রেনের চালক আনোয়ার ও সহকারি চালক জসিমকে ট্রেন থেকে নামিয়ে মারধর করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে তরুণদের কবল থেকে ট্রেনের দুই চালককে উদ্ধার করেন। এদিকে মালবাহী ওই ট্রেনটি লেভেল ক্রসিং এলাকায় আটকে পড়ায় ডাউন লাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহতাবস্থায় আনোয়ার হোসেন এবং জসীম উদ্দিন নামের ওই দুই চালককে দ্রুত আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আটকে পড়া ট্রেনটিকে সরানোর হলে এক ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাষ্টার মো. সোয়েব মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় একটি মোরসাইকেল ট্রেনটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে মোটরসাইকেল আরোহীরা ট্রেনের দুই চালককে মারধর করেন। এঘটনায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেলেও দুর্ঘটনা কবলিত মোটর সাইকেলটি আটক করা হয়েছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, বিগত ২৬-২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ট্রেনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা পুরোপুরি অকেজো রয়েছে। জেলা শহরের তিনটি রেলগেট ভেঙে ফেলার কারণে হাতের ইশারায় গেটম্যানদেরকে কাজ করতে হচ্ছে।