যেভাবে কুমিল্লায় পাঁচ সেকেন্ডের ফুটেজে শনাক্ত হত্যাকারী

অটোরিক্সার জন্য শিশুকে খুন

মহিউদ্দিন মোল্লা।।

কুমিল্লা লালমাই উপজেলায় অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের জন্য শিশুকে খুন করা হয়। খুনের শিকার শিশু শাহ পরান (১৩) লালমাই উপজেলার বেতাগাঁও গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। শাহ পরান স্থানীয় বড় চলুন্ডা ব্র্যাক স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় পুলিশ মূল আসামিসহ চারজনকে গ্রফতার করে। লাকসাম থেকে বাগমারা সড়কের ১৩টি সিসি ক্যামেরার প্রায় চার শত ঘন্টার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ মামলার রহস্য বের করা হয়। পাঁচ সেকেন্ডের ফুটেজে মিশুকসহ শিশু শাহপরান এবং খুনি নূর উদ্দিনকে চিহ্নিত করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আজিম-উল-আহসান বলেন, কুমিল্লা লালমাই উপজেলায় বেতাগাঁও গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে শাহ পরান (১৩)। গত ১১ সেপ্টেম্বর শাহপরান তার বড় ভাই শাহাদাতের অটোরিক্সাটি নিয়ে পাশের বাগমারা বাজারে রওনা হয়। শাহপরান আর বাড়ি ফিরে না আসলে চিন্তিত হয়ে পড়ে শাহপরানের বাবা-মা। এনিয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয। পরেরদিন ১২ সেপ্টেম্বর ডাকাতিয়া নদীতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শাহ্পরানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুর পিতা আবদুল মালেক।

পুলিশ জানায়, শাহপরানের অটোরিক্সা ভাড়া করে লালমাই থানার জয়নগর গ্রামের দুধ মিয়ার ছেলে নুর উদ্দিন (২১)। পথিমধ্যে অটোরিক্সা চালক শাহপরানকে থামিয়ে নুর উদ্দিন একটি দোকান থেকে সুতলী কিনে নেয়। এ সময় তার এক সহযোগী শহিদ উল্লাহকে নিয়ে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। পরে নুর উদ্দিন ও তার সহযোগী শহিদউল্লা মিলে শাহপরানকে নদীর পাড়ে নিয়ে সুতলী দিয়ে হাত-পা বেঁধে শ^াসরোধে হত্যা করে। লাশটি ঝোঁপের মধ্যে ফেলে দিয়ে অটোরিক্সাটি নিয়ে চলে যায়। আটক আসামিরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আসামিদের স¦ীকারোক্তি মোতাবেক জানা যায়, অটোরিক্সাটি লাকসাম জংশনের ভাঙ্গারী দোকানী গোলাপ হোসেনের কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। গোলাপ অটোরিক্সাটি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নাছির উদ্দিনের কাছে বিক্রি করে। পুলিশ নুরউদ্দিন,তার সহযোগী শহিদ উল্লাহ,চোরাই অটো ক্রেতা গোলাপ হোসেন ও নাছির উদ্দিনকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

 

লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, জেলার লাকসাম থেকে বাগমারা সড়কের ১৩টি সিসি ক্যামেরার প্রায় চারশত ঘন্টার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ মামলার রহস্য বের করা হয়েছে । একটি অংশে পাঁচ সেকেন্ডের ফুটেজে মিশুকসহ শিশু শাহপরান এবং খুনি নূর উদ্দিনকে চিহ্নিত করেন। এর পরই পুলিশ নুরউদ্দিনকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করে। বুধবার জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নুর উদ্দিনসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারের পরই ঘটনার আদ্যপ্রান্ত বেরিয়ে আসে।