শপিংমলের সিঁড়ি যেন ডাস্টবিন!

সাইফুল ইসলাম সুমন।।
কুমিল্লা নগরীর ব্যস্ততম কিছু শপিংমলের সিঁড়িগুলো ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। নিউ মার্কেট, সিটি মার্কেট, আনন্দ সুপার মার্কেট এবং হাজী প্লাজাসহ বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। সিঁড়িতে পড়ে আছে পলিথিন, শুকনো বর্জ্য ও অন্যান্য আবর্জনা। এতে যেমন পরিবেশের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে, তেমনি ভোগান্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা।
মার্কেটের সিঁড়িগুলো সাধারণত মুখ্য প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সিঁড়ির প্রতিটি ধাপে পড়ে থাকে কাগজ, সিগারেটের উচ্ছিষ্ট, টি-ব্যাগ, টিস্যু ও নানা রকম বর্জ্য। বিশেষ করে সিটি মার্কেট ও নিউ মার্কেটের সিঁড়িগুলো কার্যত ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। নিউ মার্কেটের দক্ষিণ পাশের সিঁড়ির নিচে জমে থাকা ময়লা দীর্ঘদিন অপসারণ না করায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এছাড়া চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেশিরভাগ মার্কেটে লিফট থাকায় সিঁড়ির ব্যবহার কম হলেও কিছু মার্কেটে লিফটের অভাবে সিঁড়িই একমাত্র ভরসা। এসব সিঁড়িতে ময়লা জমে থাকার কারণে অনেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। বিশেষ করে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিরা। একই সঙ্গে নতুন ক্রেতার কাছে এটি একটি নেতিবাচক ছাপ তৈরি করে, যা মার্কেটের ব্যবসায়িক ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ক্রেতা মহিউদ্দিন নাবিল বলেন, ‘সিঁড়িতে উঠতেই চোখে পড়ে ময়লা। অনেকেই সিঁড়িতে সিগারেট খেয়ে প্যাকেট ফেলে দেন। কোথাও যেন কোনো নিয়মকানুন নেই!’ তিনি আরও বলেন, ‘সিঁড়িতে ধুলোবালি ময়লা দেখলেই গা শিহরে উঠে।’
সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ী মিনহাজুল ইসলাম জানান, ‘নোংরা সিঁড়িতে আমরা নিজেরাই অস্বস্তি বোধ করি। তাহলে ক্রেতারা এই পরিবেশে কেন আসবেন? নিউ মার্কেটের নিচতলায় মাছ ও সবজির দোকানগুলোর সামনেও পানি ও আবর্জনা জমে থাকে, যা দীর্ঘ সময় ধরে দুর্গন্ধ ছড়ায়।’
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রতি মাসে চাঁদা দিলেও পর্যাপ্ত নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। নিচতলার কিছু অংশ পরিষ্কার করা হলেও উপরের তলাগুলোর সিঁড়িগুলো থাকে উপেক্ষিত। অনেকে তাদের অব্যবহৃত পণ্য ও দোকানের মালামালও সিঁড়িতে রেখে দেন, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে।
নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিপক সাহা বলেন, ‘আমরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাধ্যমে মার্কেট পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। তবে যেসব স্থানে অপরিচ্ছন্নতা রয়ে গেছে, সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভূইঁয়া বলেন, ‘নগরীর শপিংমলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে নিয়মিত নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। স্থাপনার অনুমোদনের সময় যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত থাকে, তার মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটি প্রধান বিষয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সচেতনতায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।’
