বদরুল হুদা জেনু-দি লিজেন্ড অব কুমিল্লা

মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী।।

inside post
মাসুদ রানা চৌধুরী

কুমিল্লাকে নিয়ে আমাদের গর্ব করার মতো অনেকগুলো বিষয়ের একটি হচ্ছে এই যে, এ শহরে একজন আলোকিত মানুষ জনাব বদরুল হুদা জেনু বাস করেন। উনার মূল্যবান উপস্থিতি কুমিল্লাকে দেশের অন্যান্য জেলার মানুষের কাছে সম্মানের জায়গায় তুলে ধরেছে। তিনি কি করেন তার উত্তর দেয়ার চেয়ে তিনি কি করেন না সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়া সহজ। একজন সব্যসাচী সংগঠক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সামাজিক-সাংস্কৃতিকজন, বাচিক শিল্পী, প্রচার বিমুখ আত্মনিবেদিত এ সাদা মনের মানুষটি গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে কুমিল্লার সকল ভালো কাজের সমার্থক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন। ক্রীড়া পাগল এ মানুষটি ছাড়া কুমিল্লার কোন ক্রীড়ানুষ্ঠানই যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় না। শুধু কি ক্রীড়া? এর বাইরেও সমাজ সেবা, পরিবেশ সংরক্ষণে,দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি তার কাজ দিয়ে কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘ দিন ধরে। বিতর্ক চর্চায় উৎসাহ দিয়ে কুমিল্লার আগামী প্রজন্মকে যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে উনার অবদান এক কথায় অতুলনীয়। সদালাপী, সদাহাসিমুখের জেনু ভাই একজন বিদগ্ধ পাঠক, একজন সু-পরামর্শক। এসবের বাইরে জেনু ভাই কুমিল্লার রাজনীতি, ইতিহাস ঐতিহ্যের একজন জীবন্ত ডায়রি। স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতাত্তোর কুমিল্লার অনেক রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে তার জানার পরিধি আমাদের মুগ্ধ করে।
বদরুল হুদা জেনু ভাই আমাকে কবে থেকে চিনেন জানি না তবে আমি উনাকে চিনি আমার কুমিল্লা জিলা স্কুলের ভর্তির (১৯৮০ সাল) সেই তরুণ বয়স থেকে। যেহেতু খেলা পছন্দ করতাম তাই স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গেলেই উনাকে দেখতে পেতাম। দেখেছি খেলাধুলার টেকসই উন্নয়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে নিবেদিত প্রাণ এ মানুষটির সাংগঠনিক কর্মকা-। দেখেছি ও মুগ্ধ হয়েছি। তিনি বরাবরই একজন নিবেদিত প্রাণ, বন্ধুবৎসল মেন্টর ও সংগঠক। আমার অবাক লাগে এটা ভেবে যে, একজন মানুষ কি করে বিভিন্ন বয়সের এতো এতো মানুষের বন্ধু হতে, বিভিন্ন শেণী-পেশার মানুষের প্রিয়পাত্র হতে পারেন।
বদরুল হুদা জেনু ভাই হচ্ছেন আমেরিকান লেখক জন সি. ম্যাক্সওয়েলের চিহ্নিত করা তেমনি একজন নেতা যিনি রাস্তা চেনেন, হেঁটে চলেন এবং অন্যদের রাস্তা দেখান এবং যিনি মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগান। জেনু ভাইয়ের বড় গুণ হলো তিনি খুব সহজভাবে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে জানেন।
কুমিল্লার সামাজিক, পরিবেশ ও প্রতিবন্ধীবান্ধব সংগঠন ‘আলোকিত বজ্রপুর’ এর একজন অভিভাবক হিসেবে শুরু থেকেই তিনি এ সংগঠনের সাথে থেকে পরামর্শ দিয়ে সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। এ সংগঠনটি উনার কাছে ঋণী। কুমিল্লার মাটি মানুষের গর্বিত সন্তান বদরুল হুদা জেনু ভাইয়ের সম্মানে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে ‘আলোকিত বজ্রপুর’ সম্মানিত বোধ করছে।
প্রিয় বদরুল হুদা জেনু ভাই আপনি সুস্থ থাকুন- আনন্দে বাঁচুন, আলোকিত বাতিঘর হিসেবে কুমিল্লাবাসীর মাঝে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকুন। আপনার সাথে কুমিল্লার নজরুল ইনস্টিটিউটের পিছনের ধর্মসাগরমুখী বারান্দায় বসে বৃষ্টিঝরা সন্ধ্যায় বুট-মুড়ি আর রং চায়ের আড্ডায় মেতে উঠতে চাই বার বার।
লেখক:অতিরিক্ত সচিব
বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন ও
সংগঠক, আলোকিত বজ্রপুর।

আরো পড়ুন