শালবনের ইটের ভাঁজে হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস


ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীর প্রতীক্ষায় শালবন বিহার
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে ঈদ আর বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় থাকে। এবার ঈদ-উল আযহার ছুটিতেও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখানে শালবন বৌদ্ধ বিহার ছাড়াও পাশের রূপবানমুড়া, কোটিলা মুড়া ও বাণিজ্যিক পার্কগুলোতেও দর্শনার্থীরা ভিড় করবেন। এখানে সড়ক সম্প্রসারণ,আবাসিক ব্যবস্থা ও আইন শৃংখলা ব্যবস্থার উন্নতির দাবি জানিয়েছেন সচেতন ব্যক্তিরা। এছাড়া এখানের প্রতিটি ইটের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস তা নতুন প্রজন্মকে জানানোর ব্যবস্থা করার দাবিও তারা জানান।
সূত্রমতে, কুমিল্লা নগরী থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে শালবন বিহার। এটি দেব রাজ বংশের চতুর্থ শাসক ভব দেব ৭ম শতকে নির্মাণ করেন। এটি একটি ধর্মীয় শিক্ষালয় বলে পরিচিত। এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ জ্ঞান আহরণ করতে আসতেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ছুটি থাকায় শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকায় দর্শনার্থীর আনাগোনা নেই। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, রঙ্গন,মোসন্ডা,জারবেরা,নয়নতারা,গোলাপ,হেজ পাতা, কফিআন,নানা পাাতাবাহারসহ বিভিন্ন রঙের ফুল তার রূপের পসরা সাজিয়ে বসে আছে। তাল গাছের মাথায় বাসা বোনায় ব্যস্ত বাবুই পাখি। খেজুর গাছের মাথায় ঝুলছে হলুদ ফলের কাদি। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা রঙের পাখি। তাদের কণ্ঠে বাজছে বিচিত্র সঙ্গীত।
সিসিএন শিক্ষা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ড.তারিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন.শালবন বিহারের সড়ক খুবই সরু। দুইটি বাস ক্রসিং করতে পারে না। বিশেষ করে বার্ড ও পলিটেক ইনস্টিটিউটের মাঝর সড়কটি। এটি প্রশ^স্ত করা হলে দর্শনার্থীরা সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। এছাড়া আবাসিক ব্যবস্থা ও আইন শৃংখলার উন্নয়ন করা গেল দেশের সাথে বিদেশের পর্যটকও আকৃষ্ট করা যাবে।
শিক্ষক ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন,শালবন বিহার ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঝে অবস্থিত। সাথে মহাসড়ক ও ভালো রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। একদিনে বেড়ানোর জন্য শালবন বিহার প্রথম পছন্দ হতে পারে। এখানে বেড়ানোর সাথে আমাদের সমৃদ্ধ অতীত জানার সুযোগ রয়েছে।
ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর বলেন,শালবন বিহার শুধু কোন বিনোদন কেন্দ্র নয়। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এটি ব্যাপকভাবে জানাতে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে এখানে বিভিন্ন স্থানে এটির ঐতিহাসিক গুরুত্বের তথ্য দিয়ে ফেস্টুন প্রদর্শন ও পুস্তিকা সহজলভ্য করতে হবে।
ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন,ঈদের ছুটিতে এখানে দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় থাকে। এবার বৈরী আবহাওয়া না থাকলে ভালো দর্শনার্থী আসবেন বলে আশা করছি। স্বাভাবিক সময়ের মতো ঈদ উপলক্ষে শালবন বিহারের সৌন্দর্য বর্ধনে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।