‘শেখ পরিবার সরাসরি যুদ্ধের প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো’
‘আমাদের ওপর কেউ প্রভূত্ব করবে বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না’
‘ইসলামাবাদ থেকে ঢাকা এনেছি, দিল্লি যাওয়ার জন্য নয়’
প্রতিনিধি।।
কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এখানে দাঁড়িয়ে স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। আমরা ১৯৭১ সালে খালি হাতে যুদ্ধ করে ইসলামাবাদ থেকে ঢাকা এনেছি, দিল্লি যাওয়ার জন্য নয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ভারত এই উপমহাদেশের একটি বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ। তারপরও আমরা চাই জিয়াউর রহমান যে সার্ক গঠন করেছেন, সে সার্কের আলোকেই এই উপমহাদেশের রাজনীতি চলবে। আমাদের সাথে কারো বৈরিতা নেই, আমাদের সাথে সবার বন্ধুত্বই থাকবে। কিন্তু আমাদের ওপর কেউ প্রভূত্ব করবে বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ১৯৭৪ সালের শেখ মুজিব কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিলেন। সেই দুর্ভিক্ষে ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে। এই ঢাকা শহর থেকে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষের দেশে পরিণত হয়েছিল। মানুষ এবং কুকুর ডাস্টবিনের খাবার একসাথে টেনে খেয়েছে। কাফনের কাপড়ের অভাবে কলাপাতা দিয়ে মানুষকে দাফন করতে দেখেছি। যেই সেনাবাহিনী দেশ স্বাধীন করেছিল সেই সেনাবাহিনীর থেকেও বেশি মর্যাদা দিয়ে রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল শেখ মুজিব। ভারতীয় বিএসএফের আদলে জলপাই রঙের রক্ষীবাহিনী গঠন করে তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে হত্যা ও ধর্ষণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। এ সময় ৪০ হাজার দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।
বিএনপি নেতা বুলু বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি। শেখ মুজিব গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিল। গণতান্ত্রিক ওয়েতে সরকার পরিবর্তনের কোন উপায় না থাকায় ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে অনিবার্য ছিল। তেমনিভাবে ৫ আগস্টও শেখ হাসিনার জন্য অনিবার্য ছিল। শেখ হাসিনাও তার বাবার মত হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। সে ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষকে গুলি করেছে। যার ২ হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে। এখনও কয়েক হাজার মানুষ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমনসহ অন্যান্যরা। পরে আগামী ৯ দিনের মধ্যে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নসহ বিভাগীয় সম্মেলন শেষ করতে নেতাকর্মীদের তাগিদ দেন।
বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর বাংলাদেশে অবৈধভাবে জগদ্দল পাথরের মত ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের কাছে করদরাজ্যের মত বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ভারতের আদানির সাথে অবৈধ চুক্তি, পাঁচটি করিডোর, তিনটি সমুদ্রবন্দর লিজ দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। আজকের যে অর্থনৈতিক দুরবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এসব তারই ফল। শেখ পরিবার বাংলাদেশ থেকে ২০ লক্ষ কোটি টাকা লোপাট করেছে। মেগা প্রজেক্টের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনাতেন। তিনি আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বলেন,মুক্তিযুদ্ধে তো আপনাদের কোন অবদান নেই। কৃষক-শ্রমিক-জনতা যারা যুদ্ধ করেছিল তারা তো মুক্তিযুদ্ধের অংশীদার হতে পারেনি। আজকে যে সংকট ১৯৭১ সালেও এমনি সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। শেখ পরিবারের একজন মানুষ যদি মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে সরাসরি যুদ্ধ করে থাকেন এমন প্রমাণ দিতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।