সবজির জমিতে গেইট লেখা স্বাগতম!

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
দক্ষিণগ্রাম। কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার একটি পরিচিত গ্রাম। গ্রামের পদ্মবিল এর পরিচিতি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিলে প্রতিদিন দর্শনার্থীর ভিড় জমে। এই গ্রামে আরেকটি ব্যতিক্রম দৃশ্যের দেখা মিলে গ্রামের উত্তর পূর্বপাড়ায়। এখানের সবজির জমিগুলো যেন হয়ে উঠেছে বিয়ে বাড়ি। জমিতে প্রবেশে রয়েছে গেইট। সেখানে লেখা স্বাগতম। যেন বরযাত্রীর জন্য এত আয়োজন। তবে বরযাত্রীদের পোশাকেও রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। মুখে মাস্ক,মাথায় ক্যাপ,গায়ে এপ্রোন ও হাতে গ্লাভস।
সরেজমিন গ্রামের আবুল কাশেমের জমিতে গিয়ে দেখা যায়,বরবটির জমির চারপাশের নেটের বেড়া। জমিতে প্রবেশে রয়েছে গেইট। গেইটের পাশে লেখা জমিতে খাওয়া,পানি পান ও ধূমপান করা যাবে না। তার নিকটবর্তী জমিতে মফিজুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামও একই পদ্ধতিতে চাষ করেছেন।
আবুল কাশেম বলেন, তিনি সাবেক সেনা সদস্য ছিলেন। অবসরে এসে সবজি চাষ করছেন। এবার প্রথম পার্টনার প্রকল্পের আওতায় উত্তম কৃষি চর্চার(গ্যাপ) মাধ্যমে সবজি চাষ করছেন। এবার তিনি বরবটি চাষ করেছেন। এতো নিয়ম কানুন দেখে প্রথমে অন্যরা হাসাহাসি করেছেন। তবে ভালো ফসল ও দাম বেশি পাবেন শুনে তারাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জৈব বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সবজি চাষ করায় পরিবেশ দূষণ কমছে।
স্থানীয় কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, এই গ্রামের কৃষকদের সবজি চাষের পদ্ধতি দেখে প্রথমে বিস্মিত হয়েছি। পরে জানলাম স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে বিষমুক্ত উপায়ে এখন ফসল উৎপাদন হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণ কমবে,মানুষ নিরাপদ সবজি পাবে এবং কৃষক ফসলের ভালো দাম পাবেন। আমিও এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করবো।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার বলেন,বুড়িচং উপজেলায় প্রথমবারের মতো পার্টনার প্রকল্পের আওতায় গ্যাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ হচ্ছে। আমাদের উপজেলায় চারটি প্রদর্শনী রয়েছে। কৃষকদের পার্টনার প্রকল্প থেকে উত্তম কৃষি চর্চার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা দিন দিন উত্তম কৃষি চর্চায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এতে তাদের ২০ভাগ আয় বাড়বে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন,পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার ১৭উপজেলায় উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন হচ্ছে। আমরা কৃষকদের উত্তম কৃষি চর্চার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছি। জমিতে কৃষকরা জৈব বালাই ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করছেন। মাটির পরীক্ষা করে সার দেয়া হচ্ছে,যেন বেশি সার প্রয়োগে ফসলের ও মাটির ক্ষতি না হয়। এতে মানুষ নিরাপদ ফসল পাবে। আমরা বিদেশে ফসল রপ্তানি করতে পারবো। কৃষকও তার পণ্যের ভালো দাম পাবেন।

inside post
আরো পড়ুন