সয়াবিন চাষে নতুন সম্ভাবনা বাংলাদেশে

মোহাম্মদ শরীফ।।
তেল জাতীয় ফসল সয়াবিন চাষে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। দেশের দক্ষিণ অঞ্চল গুলোতে ক্রমশ বাড়ছে এই তেলের চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় একদিকে যেমন পূরণ হবে দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা। অন্যদিকে এতে করে কমে আসবে পণ্যটির বিদেশ নির্ভরতা। দেশের সবচেয়ে বেশি সয়াবিন চাষ হয় নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী জেলায়। নোয়াখালীর সূবর্ণচর ও লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলা ঘুরে দেখা মিলে বিস্তীর্ণ সয়াবিনের মাঠ। সয়াবিনের সবুজ পাতা বাতাসে দোল খাচ্ছে। ধানী জমিতে শুষ্ক মৌসমে উৎপাদন হচ্ছে সয়াবিন। দক্ষিণ অঞ্চলে মিঠা পানির স্বল্পতার কারণে ধানের বিকল্প ফসল হিসেবে সয়াবিন চাষ করেন কৃষকেরা। এছাড়া এসব জমি লবণাক্ত হওয়ার অধিকাংশ সময় থাকে পতিত। লবণাক্ত জমিতে বিকল্প ফসল হিসেবে সয়াবিন চাষে দেখা মিলছে সুফল। সয়াবিনের বাম্পার ফলনে দেশে গবেষণা বাড়ছে ফসলটি নিয়ে। ইতিমধ্যে উচ্চ ফলনশীল বিনা-৩, বিনা-৫, বিনা-৬ ও বিনা-৭ জাতের সয়াবিনের বীজ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
তবে দেশে উৎপন্ন করা সয়াবিন থেকে তেল উৎপাদনের সহজলভ্যতা না থাকায়, এসব উৎপাদিত সয়াবিন সবজি ও পশু খাদ্য হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, দেশে উৎপাদিত সয়াবিনকে তেল হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিতে হবে। একই সাথে এর বাণিজ্যিক ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। এতে খুলে যাবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) নোয়াখালীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহেদ হোসেন বলেন, ‘নোয়াখালীতে বড় ধানার সয়াবিন চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। নতুন উদ্ভাবিত জাতের সয়াবিন গুলো কৃষকেরা চাষে বেশ আগ্রহী। আমাদের স্থানীয় কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে এসব বীজ পৌছে দিচ্ছি।’
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আশিকুর রহমান ও বিনা নোয়াখালীর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘এসব এলাকা ু লবণাক্ত প্রবণ। সে কারণে অনেক জমিতে ফসল চাষ হয় না। এসব জমি যেন পতিত না থাকে, তাই লবণ সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে আমরা জোর দিচ্ছি। তাই সয়াবিন চাষ শক্তিশালী করতে আমরা কৃষকদের বীজ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া নানা উপকরণ ও প্রদর্শনী মাধ্যমে তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।
