সাক্কুর স্ত্রী দুর্নীতির টাকায় কানাডায় বাড়ি কিনেছেন:রিফাত

স্টাফ রিপোর্টার।
প্রচারণা ৯ম দিন শেষ হয়েছে। আরও আছে ৯দিন। দিন দিন বাড়ছে প্রচারণার গতি। সাথে বাড়ছে প্রতিশ্রুতির তালিকা ও কথার লড়াই। শনিবার দুপুর থেকে কুমিল্লা নগরীতে নামে মুষলধারার বৃষ্টি। বৃষ্টির পানিতেও উত্তাপ কমেনি কথার লড়াইয়ের। ৫জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনজন এই লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। কয়েকদিন ধরে চলা কথার লড়াইতে যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত শনিবারের বিভিন্ন পথসভায় বলেন, সাক্কু সাহেব যেখানে ডাকবেন সেখানে যাবো। সুধী সমাজসহ বসবো। আমি প্রমাণ করে দিবো তিনি দুর্নীতিবাজ। তিনি সাক্কুর স্ত্রীকেও দোষারপ করে বলেন,তার স্ত্রী দুর্নীতির টাকা নিয়ে কানাডায় বাড়ি কিনেছেন। প্রমাণ না করতে পারলে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবো।

এদিকে বিএনপির সাবেক নেতা,সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তার এসব কথার ভিত্তি নেই। টেবিল ঘড়ির জোয়ার দেখে তিনি প্রলাপ বকছেন। রিফাত সাহেব সরকার না পীর। তিনি এসব বিষয়ে বলার কে? স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, একজন আরেকজনকে চোর বলেন। কেউ টাউন হলে ডাকেন। কেউ স্টেডিয়ামে ডাকেন। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে সন্ত্রাসের। তাই তারা গায়ের জোর দিয়ে কথা বলেন। এটা শিক্ষা সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লার ঐতিহ্যের সাথে যায় না।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত শনিবার নগরীর চক বাজার,শাপলা মার্কেট,হাউজিং এস্টেট,পুরাতন চৌয়ারা,দয়াপুর এলাকায় গণ সংযোগ ও পথসভা করেন। এসব স্থানে তিনি বলেন,কুমিল্লা নৌকার শহর। আপনারা দয়া করে আমাকে একটাবার সুযোগ দিন। আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিলে সে ভোট পাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কুমিল্লার সার্বিক উন্নয়ন কেউ করতে পারবেন না। তিনি নির্বাচিত হলে,এক বছরের মধ্যে কুমিল্লার জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাক্কুকে আগে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি টাউন হলে আসার আহবান জানিয়েছিলেন।

তার পাল্টা সাক্কু বলেছিলেন,তারা গায়ের জোরে কথা বলেন। গায়ের জোর দেখালে স্টেডিয়ামে আসতে। তিনিও যাবেন। তার উত্তরে শনিবার গণমাধ্যমকে রিফাত বলেন, সাক্কু সাহেব যেখানে ডাকবেন সেখানে যাবো। সুধী সমাজসহ বসবো। আমি প্রমাণ করে দিবো তিনি দুর্নীতিবাজ। প্রমাণ না করতে পারলে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবো। তিনি আরো বলেন, আমি কুমিল্লা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি। আমি মাঠের মানুষ। সাক্কু জীবনেও খেলার মাঠে যায়নি। গতবার আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ফেল করানোর বিষয়ে রিফাতের দিকে সাক্কুর ইঙ্গিতের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। আমি জীবনে সাক্কুর অফিসে যাইনি। সীমা আমাদের দলের মহিলা এমপি। তিনি নৌকার জন্য মাঠে কাজ করবেন বলে বিশ^াস করি। তিনি বলেন, সাক্কুর দলও তাকে ভালো মনে করে না। বিএনপি থেকেও তিনি বহিষ্কৃত। তার সাথে কেন আমি যাবো।
তিনি সাক্কুর স্ত্রীকেও দোষারপ করে বলেন,তার স্ত্রী টাকা নিয়ে কানাডায় বাড়ি কিনেছেন। সেটার প্রমাণও আছে।
বিএনপির সাবেক নেতা,সাবেক মেয়র, স্বতন্ত্র প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু দিনভর নগরীর দৌলতপুর,শাকতলা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন, আমি আমার প্রতিশ্রুতির ৭০ভাগ পূরণ করেছি। বরাদ্দ সংকটে সব কাজ করা যায়নি। এবার বড় প্রকল্প পাস হয়েছে। জয়ী হলে যানজট জলাবদ্ধতাসহ বাকী কাজ গুলো সমাধান করবো। এছাড়া তিনি বস্তি এলাকায় যাদের থাকার ঘর নেই তাদের জমি থাকা সাপেক্ষে ঘর করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি আরকটিবার সুযোগ চান।
রিফাতের অভিযোগের বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, তার এসব কথার ভিত্তি নেই। টেবিল ঘড়ির জোয়ার দেখে তিনি প্রলাপ বকছেন। রিফাত সাহেব কে? তিনি সরকার না পীর। তিনি এসব বিষয়ে বলার কে? দেশে সরকার আছে দুদক আছে। আমার অনিয়ম থাকলে তারা ব্যবস্থা নেবে। তিনি এসব কথা না বলে,মানুষের দ্বারে দ্বারে যাক। তিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি হাঁটতে থাকুন। নিজের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিন।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ঘোড়া প্রতীকের মেযর প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার শনিবার নগরীর,কাপ্তান বাজার,ইসলামপুর,পুরাতন চৌধুরীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন,রিফাত ও সাক্কু দুইজন একই নেতার লোক। তারা কুমিল্লার মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। এসব লুটেরা এবার কালো টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের এবার কুমিল্লার মানুষ প্রতিহত করবে। ১৬জুন সকালে কুমিল্লায় এক নতুন সূর্যের উদয় হবে। নতুন প্রজন্মের জন্য নতুন কুমিল্লা গড়ে তোলা হবে। কোনা ব্যক্তি নয় এটা হবে নিরাপদ ও সম্প্রীতির কুমিল্লা। তিনি নগরীর যানজট,জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনিও একবার সুযোগ চান। রিফাত ও সাক্কুর বাগযুদ্ধের বিষয়ে তিনি গণ মাধ্যমকে বলেন, একজন আরেকজনকে চোর বলে। কেউ চোর কেউ বড় চোর। কেউ টাউনহলে কেউ স্টেডিয়ামে আসার আহবান জানায়। তাদের ব্যাগ্রাউন্ড হচ্ছে সন্ত্রাসের। তাই এসব রুচিহীন ভাষায় কথা বলছেন। তারা গায়ের জোর দিয়ে কথা বলেন। এটা শিক্ষা সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লার ঐতিহ্যের সাথে যায় না। মানুষ তাদের বয়কট করবে। মানুষ এখন শিক্ষিত ও সৎ মেয়র খোঁজ করছেন।