সাপের কামড়ানো শিশু তন্মীর মৃত্যু

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম আক্তার তন্মী। বাড়ির পাশে পুকুর পাড় খেলা করতে গেলে সাপে কামড় দেয়। দ্রুত মায়ের কাছে বিষয়টি জানায় তন্মী। এক ঘন্টা পর তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। সেখানে ভ্যাকসিন নেই বলে শিশুটিকে চট্টগ্রাম প্রেরণ করলে পথে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল গ্রামে। তন্মী ওই গ্রামের প্রবাসী শাহ আলমের মেয়ে। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তন্মী ছোট ছিলো।
শুক্রবার তন্মীর বাবা শাহ আলম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৭ বছরের মেয়ে তন্মী বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে খেলতে যায়। একটু পরে এসে মাকে জানায় তার পায়ে সাপে কামড় দিয়েছে। মেয়ের অবস্থা খারাপ হলে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। সন্ধ্যা ৬ টায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২য় তলায় একটি কক্ষে নিয়ে স্যালাইন পুশ করে ডাক্তার। আধঘন্টা পর ডাক্তার ও নার্সরা জানায় তাঁকে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন দিতে হবে। কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই, ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে নিতে হবে।
শিশুটির পিতা আরো জানান, হাসপাতলের লোকজন একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে শিশুটিকে চট্টগ্রামের পাঠিয়ে দেয়। সন্ধ্যা ৭ টায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক জেলার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় শিশুটিকে। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা করে জানায় শিশুটির মৃত্যুবরণ করেছে। পরে শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি চলে আসে শাহ আলম।
এদিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে সাপের ভ্যাকসিন নেই, চট্টগ্রামে নেয়ার পথে শিশুর মৃত্যু খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, সাপে কামড়ের চিকিৎসা কুমিল্লা সদর হসপিটালেই করানো হয়। কি কারণে তাকে চট্টগ্রাম পাঠানোর কথা বলেছে তা জানা নেই। সদর হসপিটাল ছাড়াও কয়েকটি উপজেলাতে সাপে কামড়ের চিকিৎসা চালু হয়েছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মহিউদ্দিন জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবশ্যই সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হয়। তবে গতকালের এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখবো। অবশ্যই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।