সালিশদারের ওপর হামলা,বাড়িঘর ভাংচুর

 

inside post

উপজেলা রিপোর্টার,চৌদ্দগ্রাম।।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বিধবার ঘর ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালা ঝুলছে সেই ঘরে। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের বশকরা গ্রামে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের থানায় মামলা দায়েরের ২১ দিন পর পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন ওই বিধবা।

থানায় দায়েরকৃত বিধবার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের বশকরা গ্রামের মৃত আমির হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের(৫০) সাথে একই গ্রামের পাশ্ববর্তী বাড়ির মৃত আবদুল করিম চুট্টুর ছেলে দুলাল গংদের জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এর জেরে মনোয়ারা ও তার সন্তানদের উপর জুলুম অত্যাচার করে আসছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় দুলাল গং-রা বাড়িঘর ভাংচুর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। গ্রামে সালিশ বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি আপোষের কথা থাকলেও তা আর হয়নি। গত ২১ ডিসেম্বর বাড়ি যাওয়ার পর প্রতিপক্ষ দুলালরা খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টায় অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনসহ হামলায় বাড়িঘর ভাংচুর করে। মারধর করে মনোয়ারা ও নাতি ইমরানকে(১৪)। ঘটনার পরদিন মনোয়ারা ও তার নাতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

অপরদিকে ১ ডিসেম্বর মোঃ দুলাল বাদী হয়ে আবু বক্কর, তার মা মনোয়ারা বেগম, বোন পাখি আক্তার ও আবদুল হান্নানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে জানা যায়, মনোয়ারার ছেলে আবু বক্কর মাদক বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। আবু বক্করের চাচাতো ভাই ছয় মাস আগে প্রবাসে মারা যায়, যার লাশ এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি। আবু বক্কর চাচাতো ভাইয়ের বিধবা বউকে নিয়মিত উত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট অভিযোগ করলে আবু বক্কর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বিধবাকে মারধর করে। ২৬ নভেম্বর বিকেলে এ নিয়ে গ্রামে সালিশ চলাকালীন আবু বক্কর সালিশদারদের উপর আক্রমনাত্মক আচরণ ও অশ্লীল ব্যবহার করে। সালিশদার দুলাল অভিযুক্ত বক্করকে নিবৃত্ত করতে গেলে কোমরে রাখা ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুলালের উপর হামলা করে। দুলাললে বাঁচাতে তার প্রবাসী ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন বাবু এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। গ্রামবাসী দুই ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর বাবুর অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা পাঠানো হয়।

গ্রামবাসী জানান, মনোয়ারা ও তার ছেলে আবু বক্কর মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের নামে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। তাদেরকে মাদক বিক্রির পথ থেকে সরে আসতে অনেক বুঝানো হয়। সে মাদক বিক্রি করে এবং গ্রামের যুবকদেরকে মাদকাসক্ত করছে। ছয় মাস আগে বিদেশে মারা যাওয়া তার চাচাতো ভাইয়ের বিধবা বউকে কুপ্রস্তাব দেয় সে। এতে রাজি না হয়ে গ্রামের বিচারকদের কাছে নালিশ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বিধবাকে মারধর করে আবু বক্কর। এ নিয়ে বসা সালিশে আবু বক্কর সাথে লুকিয়ে রাখা চায়নিজ কুড়াল দিয়ে বিচারক দুলালের মাথায় আঘাত করে। দুলালকে বাঁচাতে গিয়ে তার ছোট ভাইও মাথায় আঘাত পান। তখন উত্তেজিত গ্রামবাসী আবু বক্করের ঘর ভাংচুর করে। ঘটনার পরপরই আবু বক্কর পালিয়ে যায়। তারপর থেকে মনোয়ারার পরিবার বাড়িতে আসেনা। মনোয়ারার ছেলে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে এসে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে মনোয়ারার দাবি ২১ ডিসেম্বর রাতে তার ঘর ভাংচুর করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলার কনকাপৈত তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই জাকির হোসেন জানান মনোয়ারা বেগমের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন