স্মার্ট ক্লাস রুমে খেলার ন্যায় পড়ছে শিক্ষার্থীরা

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বইয়ের পাতায় যা, ডিজিটাল স্ক্রিনেও তা। তার ওপর স্ক্রিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা শব্দ, বাক্যের পাশাপাশি রঙিন ছবি। শ্রেণীশিক্ষক ব্ল্যাকবোর্ডে চকে লেখার বদলে ল্যাপটপের মাধ্যমে মনিটরে ভিজ্যুয়ালভাবে করছেন পাঠদান। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দ উপভোগ এবং খেলার ন্যায় পড়ছে-শিখছে। এমনি দৃশ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রথমবারের মতো উপজেলায় চালু করা হয়েছে এই স্মার্ট ক্লাস রুম।
জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নে আড়াইসিধা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণীকক্ষকে ‘স্মার্ট ক্লাশ রুম’ হিসেবে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবস্থাপনার পর ১১ মার্চ সোমবার বিকেলে প্রথমবারের মতো এই স্মার্ট ক্লাস রুমটি চালু করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় উপজেলার ১৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে শ্রেণীকক্ষকে এবং পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণীকক্ষকেই স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলা হবে। মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে এর উদ্দেশ্য ফলপ্রসূ হলে সমগ্র জেলায় এমন স্মার্ট ক্লাস রুমের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেন।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক জানান, স্মার্ট ক্লাস রুমে একটি ল্যাপটপের মাধ্যমে মনিটরে ভিজ্যুয়ালভাবে করানো হবে পাঠদান। আগে একজন শ্রেণীশিক্ষক ব্ল্যাকবোর্ডে চকের সাহায্যে যা যা লিখে দেখাতেন, এখন ল্যাপটপের মাধ্যমে ডিজিটাল স্ক্রিনে দেখাবেন। আর এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বেশ আগ্রহ নিয়ে খেলার মতো করেই পড়তে ও শিখতে পারবে। এছাড়া ক্লাস রুমটিতে বইয়ে থাকা বিভিন্ন বিষয় ও চিত্র অঙ্কন করে সজ্জিত করেছি। কক্ষটিতে স্থাপিত একটি বই কর্ণারে রাখা হয়েছে বিভিন্ন শিশুতোষ বই। শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি শিশুতোষ এসব বই পড়ে নানান বিষয়ে জানতে পারবে। তিনি আরও জানান, স্মার্ট নাগরিক গড়তেই এই স্মার্ট ক্লাস রুম বানানো। সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণাতেই উল্লেখ করা হয়েছে চারটি স্তম্ভের কথা। উল্লেখিত চারটি স্তম্ভের একটি হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। অর্থাৎ দেশের নাগরিককে ‘স্মার্ট নাগরিক’ হিসেবে গড়ে তোলা। শিক্ষার্থীদের একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকে স্মার্ট না করতে না পারলে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠা অসম্ভব। তাই আমরা প্রথমিক থেকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
আড়াইসিধা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্মাট ক্লাশ রুম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি অনন্য উদ্যোগ, একটি পাইলট প্রকল্পও বলা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় আশুগঞ্জ উপজেলার ১৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে শ্রেণীকক্ষকে ‘স্মার্ট’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণীকক্ষকেই স্মার্ট ক্লাশ রুম বানানো হবে। মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন করাই স্মার্ট ক্লাশ রুম গড়ার মূল উদ্দেশ্য। উদ্যোগটি ফলপ্রসূ হলে সমগ্র জেলাতেই স্মার্ট ক্লাস রুমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আশুগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজি তাহমিনা নাসরিন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ.এইচ.এম শাহরিয়ার রসুল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইম মিঠু, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওনক জাহান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ভুইয়া, শিক্ষকমণ্ডলী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।